বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিত্র গড়ে তুলতে পারছে না। এজন্য দলটির নেতাকর্মীরা আন্তর্জাতিক উইংয়ের ওপর ক্ষুব্ধ।
Advertisement
দলীয় সূত্র মতে, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে প্রধান করে সর্বশেষ ২২ সদস্যের বিএনপির বৈদেশিকবিষয়ক যে উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের কার্যক্রম নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
ওই বৈদেশিক উপ-কমিটি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের এক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেকটাই বন্ধুহীন বিএনপি। জামায়াতকে জোটে রাখার দায়ে গত নির্বাচনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পায়নি দলটি। এছাড়া বর্তমানে বড় ইস্যু চীন ও ভারতের ব্যাপারে বিএনপির পলিসি কী, তাও জানেন না তারা।
দলের আরেকটি সূত্রের দাবি, ফরেন উইংয়ের অধিকাংশ সদস্যই নিষ্ক্রিয়। এমনকি তাদের অনেকেই ভারতপন্থী হিসেবে পরিচিত। গত পাঁচ মাসে নিজেদের মধ্যে ভার্চুয়াল মিটিং হলেও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে কোনো বৈঠক করতে পারেনি এই উইং।
Advertisement
দলের আরেকটি সূত্রের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বরাবরের মতো আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। নির্বাচনসহ সরকারি দলের নানা অভিযোগ নিয়ে তাদের (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) কাছে প্রমাণ তুলে ধরলেও হালে পানি পায়নি দলটি। সেখানে বরং উল্টো বিএনপির জন্য অস্বস্তিকর জামায়াত ইস্যুটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সামনে নিয়ে আসে। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে দলটির ফরেন উইং।
অপর একটি সূত্রের দাবি, গত পাঁচ-ছয় মাসে কূটনীতিকদের সঙ্গে তেমন একটা যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেনি বিএনপি। তবে নিজেদের মধ্যে অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। সেখানে অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা গেছে।
বিএনপির বৈদেশিক উপ-কমিটিতে যারা রয়েছেন, তাদের অধিকাংশই কি ভারতপন্থী— এমন প্রশ্নের জবাবে ওই সূত্রটি জানায়, বিএনপি সরকারের আমলে ঢাকায় তাইওয়ানের দূতাবাস স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়। ফলে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সে সময় যারা তাইওয়ানের দূতাবাস স্থাপনে ভূমিকা রেখেছিলেন তারা এখনও বৈদেশিক কমিটিতে অবস্থান করছেন।
বৈদেশিকবিষয়ক উপ-কমিটির কর্মকাণ্ড কী— এমন প্রশ্নের জবাবে কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপ-কমিটির কাজ হলো বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দলের কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং বজায় রাখা। দেশে অবস্থিত বিভিন্ন রাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা, তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলা।
Advertisement
কমিটির সদস্যদের মধ্যে বৈঠক হচ্ছে না— এমন তথ্য নাকচ করে দিয়ে কমিটির অন্য সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ ২২ জন নিয়ে আমাদের কমিটি। আমরা আমদের কাজ করছি। অনলাইনে নিয়মিত আমাদের বৈঠক হচ্ছে।’
কমিটির সদস্য ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘এখন করোনার সময়। রাজনীতিও নেই। সব সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ। অনলাইনে যতটুকু করা যায় ততটুকু হচ্ছে।’ কেএইচ/এমআরএম/এমএআর/এমএস