লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ধর্ষণের চেষ্টায় ১৩ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আসামি ট্রাভেলস কর্মী বাহারুল আলম বাহার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
Advertisement
রোববার (৯ আগস্ট) বিকেলে তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়হান চৌধুরীর আদালতে হাজির করলে তিনি এ জবানবন্দি দেয়। নিহত স্কুলছাত্রীর বড় বোনের ওপর ক্ষোভ-অভিমান থেকে কৌশলে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়।
এদিকে ১২ জুন সদর উপজেলার পালেরহাট পাবলিক হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী হিরামনিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। আলোচিত এ ঘটনা তখন দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড় হয়। এ ঘটনায় তিন আসামি কারাগারে রয়েছে। প্রায় ২ মাসেও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
জবানবন্দি প্রসঙ্গে রামগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহসিন চৌধুরী জানান, আদালতের আসামি বাহার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এতে বলা হয়, কৌশলে শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাহার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
পুলিশ কর্মকর্তা মহসিন জানান, গতকাল শনিবার (৮ আগস্ট) রাতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ছাত্রীর মরদেহ তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উত্তোলন করতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে মরদেহ উত্তোলন করা হবে। এতে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যাবে।
মৃত কিশোরী উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের বাউরখাড়ার এলাকার এক গ্রাম পুলিশ সদস্যের মেয়ে ও ভাটরাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ জানায়, হত্যার ঘটনায় রোববার সকালে স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বাহারসহ ২ জনের নাম উল্লেখ ও অচেনা ৪ জনের বিরুদ্ধে রামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। বাহার বাউরখাড়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে।
এরআগে রাতেই এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বাহারকে আটক করে পুলিশ। উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন, বাহারের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার।
Advertisement
এজাহার সূত্র জানায়, শনিবার সকালে ওই স্কুলছাত্রীকে বেড়ানোর কথা বলে বাহার ও তার স্ত্রী রাবেয়া তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। রাবেয়া ওই স্কুলছাত্রীর বাবার বাড়ির সম্পর্কে নাতনি হয়। এরপর বিকেলে ওই স্কুলছাত্রী তাদের বাড়িতেই মারা যায়। পরে হৃদরোগে মারা যায় বলে মা-বাবার কাছে স্কুলছাত্রীর মরদেহ নিয়ে আসা হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বাহার ও রাবেয়া স্থান ত্যাগ করে। পরে বাড়ির লোকজনের সমন্বয়ে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
অন্যদিকে দাফনের কিছুক্ষণ পর লাশের গোসলের জন্য আসা একই গ্রামের সেলিনা আক্তার ও সেলিনা বেগম জানায়, গোসল করার সময় তারা স্কুলছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখেছে। এসময় গোপনাঙ্গে রক্তক্ষরণ দেখা যায়। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়। রাতেই এলাকার লোকজনকে পাহারায় বসিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বাহারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
কাজল কায়েস/এমএএস/এমকেএইচ