স্পেনে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। স্থানীয় সময় ৮ আগস্ট স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাসের হলরুমে এ দিবসটি পালন করা হয়।
Advertisement
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে সামাজিক দূরত্ব মেনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ও যথাযথ স্বাস্থ্য সতর্কতা গ্রহণ করে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়। এ সময় দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার ও দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। পরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, জাতীয় চার নেতা ও ১৫ আগস্টের ভয়াল কালো রাতে শহীদ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দূতাবাসের মিনিস্টার ও দূতালয় প্রধান এম হারুণ আল রাশিদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতি পাঠানো বাণী পাঠ করে শোনান দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মুতাসিমুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ বাণী পাঠ করে শোনান দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব তাহসিনা আফরিন শারমিন।
Advertisement
দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রেদোয়ান আহমেদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের একটি তথ্য ও গবেষণা মূলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আলোচনা পর্বের শুরুতে মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জীবন ও কর্ম এবং দেশ ও জাতি গঠনে তার অসমান্য অবদানের নানাদিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার।
বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী পালনের জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী পালনের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পেরেছি। বিশেষ করে তিনি কীভাবে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা দলীয় কর্মকাণ্ড সচল রাখতে ভূমিকা রেখেছেন, কীভাবে অবলীলায় দলীয় কর্মী এবং দলের প্রয়োজনে তার সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করেছেন। ৬ দফা ও ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে বঙ্গবন্ধুকে অটল থাকতে কীভাবে বঙ্গমাতা সাহস যুগিয়েছেন, অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করেও হাসিমুখে কীভাবে সংসার আগলে রেখেছেন তার নানাদিক আলোকপাত করেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার আরও বলেন, জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছেন। বাংলাদেশ আর বঙ্গমাতার রেখে যাওয়া আদর্শ হতে বাংলাদেশের এই অদম্য অগ্রযাত্রার মূল চাবিকাঠি।
মুজিববর্ষে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর এই আয়োজন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, একবিংশ শতাব্দীর আজকের এ ডিজিটাল পৃথিবী বঙ্গমাতাকে আরও নতুনভাবে জানার ও হৃদয়ে ধারণ করবার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা যাতে বঙ্গমাতা সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পারে সে বিষয়ে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহণ করতে হবে।
Advertisement
আলোচনা পর্বে দূতাবাসের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।দূতাবাসের মিনিস্টার ও দূতালয় প্রধান এম হারুণ আল রাশিদ বলেন, বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একজন সহযোদ্ধা ও বিশ্বস্ত সহচর।ভবিষৎ প্রজন্ম যাতে বঙ্গমাতা সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পারে তার জন্য আমাদের সকলকে ভূমিকা রাখতে হবে।
আলোচনা শেষে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এমআরএম