শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নদীর ভাঙনে ঐতিহাসিক সুরেশ্বর দরবার শরিফ রক্ষাবাঁধের প্রায় ৬০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে দরবার শরিফ ও আশপাশের লোকজন নতুন করে বাড়িঘর হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন।
Advertisement
এদিকে, ভাঙন রোধে ওই স্থানে সিসি ব্লক ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করছে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারা জানিয়েছেন, ভাঙন স্থানে শুকনা মৌসুমে বাঁধ নির্মাণে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে গত দুইদিন ধরে পদ্মার পানি আবারও বাড়তে শুরু করায় শরীয়তপুরের চার উপজেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ পানিবন্দি মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। বুধবার জোয়ারের সময় পদ্মার পানি সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা বৃহস্পতিবার দুপুরে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ ও ২০১২ সালে তিন প্যাকেজে সুরেশ্বর দরবার শরিফ ও আশেপাশে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধে সুরেশ্বর দরবার ও আশপাশের এলাকা রক্ষায় ৮৫০ মিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে।
Advertisement
চলতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সুরেশ্বর দরবার শরিফ রক্ষাবাঁধের দুটি স্থানে পুনরায় ভাঙন দেখা দেয়। এতে নদীর তলদেশে গর্ত হয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে সুরেশ্বর দরবার শরিফ রক্ষাবাঁধের প্রায় ৬০ মিটার পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন রোধে ওই স্থানে বুধবার পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার জিওব্যাগ ও সাড়ে তিন হাজার সিসি ব্লক ডাম্পিং করা হয। এখনো ডাম্পিং চলমান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আরও ৩০ হাজার জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়ায় দরবার শরিফের পাশে পদ্মার পাড়ে বসবাসরত লোকজনের মধ্যে বাড়িঘর হারানোর আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সুরেশ্বর দরবার শরিফের প্রধান মোতাওয়াল্লি সৈয়দ শাহ সুফি কামাল নুরী বলেন, গত কয়েক বছর বেড়িবাঁধের জন্য আমরা শান্তিতে ছিলাম। এ বছর পদ্মার ভাঙনে দরবার শরিফ এলাকায় বেড়িবাঁধের কিছু অংশ বিলীন হয়ে গেছে। আমরা আতঙ্কে আছি। শেষ রক্ষা হবে কি-না জানি না।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে নদীর তলদেশ থেকে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক সরে যাওয়ায় সুরেশ্বর দরবার শরিফ রক্ষাবাঁধের ৬০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে প্রায় ৩৬ হাজার জিওব্যাগ ও সাড়ে তিন হাজার সিসি ব্লক ডাম্পিং করেছি। ডাম্পিং কাজ চলমান রয়েছে। শুকনা মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Advertisement
ছগির হোসেন/এএম/জেআইএম