অর্থনীতি

৭০০ কোটিতে পৌঁছাল ডিএসইর লেনদেন

ধীরে ধীরে লেনদেন খরা কাটিয়ে উঠছে দেশের শেয়ারবাজার। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে দেড় মাসের মধ্যে বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

Advertisement

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারের ভয়াবহ ধস নামে। এর প্রেক্ষিতে গত ১৯ মার্চ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দাম) নির্ধারণ করে নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করা হয়।

এতে দরপতন ঠেকানো গেলেও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে লেনদেনে অংশ নেয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম অপরিবর্তিত থাকে। ফলে দেখা দেয় লেনদেন খরা।

ধারাবাহিকভাবে কমে ডিএসইর লেনদেন ৫০ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে। অবশ্য গত কয়েকদিন ধরে লেনদেন বাড়তে থাকায় ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর লেনদেন ৫০০ কোটি টাকার ঘরে স্পর্শ করে।

Advertisement

ঈদের পরেও অব্যাহত থাকে লেনদেনের গতি। ঈদের ছুটি শেষে সোমবার শেয়ারবাজার খুললে ডিএসইতে ৬০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। মঙ্গলবারও লেনদেন হয় ৬০০ কোটি টাকার ওপরে। আর বুধবার তা আরও বেড়ে ৭০০ কোটি টাকার ঘরে পৌঁছেছে।

দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭১৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

এর মধ্যে গত ২৮ জুনের পর বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো। বহুজাতিক কোম্পানি গ্লাস্কস্মিথকলাইন আর এক বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার কিনে নেয়ার কারণে ২৮ জুন ২ হাজার ৫৪৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এর মধ্যে গ্লাস্কস্মিথকলাইনের শেয়ার লেনদেন হয় ২ হাজার ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। এ দিনের লেনদেন বাদ দিলে গত ২০ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি ৭৭০ কোটি ৬০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর আর ৭০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়নি (২৮ জুন বাদে)।

লেনদেনের এই বড় উত্থানের দিনে ডিএসইতে মূল্য সূচকে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। প্রধান মূল্য সূচক বাড়লেও, কমেছে অপর দুই সূচক। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৩০৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ২ পয়েন্ট কমে ৯৯৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৩টির। আর ৭৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসের ২৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স এবং লাফার্জহোলসিম।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৩ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮টির।

এমএএস/এনএফ/এমকেএইচ