একের পর এক বড় উত্থান ঘটছে শেয়ারবাজারে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচকের বড় উত্থানের মাধ্যমে টানা সাত কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকল শেয়ারবাজার।
Advertisement
মহামারি করোনা শুরুর পর শেয়ারবাজারে এমন টানা উত্থান আর দেখা যায়নি। একদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন কমিশনের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, অন্যদিকে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে যাওয়ায় বাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ২৯৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মধ্যে টানা সাত কার্যদিবসের উত্থানে সূচকটি ২০৩ পয়েন্ট বাড়ল।
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে। যার ফলে এমন টানা উত্থান প্রবণতা দেখা দিয়েছে। একদিকে করোনা সংক্রমণ কমে আসা, অন্যদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন কমিশন বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপে বাজারের ওপর এ আস্থা বাড়ছে।
Advertisement
তিনি বলেন, নতুন কমিশন কয়েকটি দুর্বল কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাতিল করেছে। বাজারে এসব তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। সব মিলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে অপর দুই সূচকের। এরমধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৯৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে কমেছে ১১৬টির। আর ৯১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দিনভর বাজারে লেনদেন হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৪৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১২৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
Advertisement
লেনদেনের এ গতি বৃদ্ধির বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বাজারে আসলে টাকার অভাব নেই। এতদিন বাজারে মূল সমস্যা ছিল আস্থার সংকট। এখন আস্থা বাড়ার কারণে লেনদেনও বাড়ছে।
লেনদেনের গতি বাড়ার দিনে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি দুই লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে পরের অবস্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম, গ্রামীণফোন, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, অ্যাক্টিভ ফাইন, খুলনা পাওয়ার, ইষ্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স এবং সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬৪ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি দুই লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৫৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৮টির, কমেছে ৮৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭০টির।
এমএএস/এএইচ/পিআর