দলের প্রধান তিন বোলারকে ছাড়াই টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে মিসবাহ উল হকের পাকিস্তান। পাক দলনায়ক এই সিরিজ জয়কে তাদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা জয় বলে আখ্যায়িত করেছেন।পাকিস্তানের সেরা স্পিনার সাঈদ আজমল ও দলের দুই সেরা পেসার জুনায়েদ খান ও ওয়াহাব রিয়াজকে ছাড়াই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মতো শীর্ষ দলকে ৩৫৬ রানের বড় ব্যবধানে হারায় মিসবাহর দল; যেটি পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের রানের ব্যবধানে পাওয়া সবচেয়ে বড় জয়।এর আগে সিরিজের প্রথম টেস্টেও বড় জয় পায় পাকিস্তান। মাইকেল ক্লার্কের দলকে প্রথম টেস্টে ২২১ রানে হারায় পাকরা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০ বছর পর টেস্ট সিরিজ জিতলো। এমনকি র্যাঙ্কিং এর ষষ্ঠ স্থানে থেকে সিরিজ শুরু করা পাকরা তিন ধাপ লাপ দিয়ে উঠে গেল র্যাঙ্কিং এর তৃতীয় স্থানে; ২০০৭ সালের পর যা তাদের ইতিহাসের সেরা র্যাঙ্কিং।এর আগে ২০১২ সালে আরব আমিরাতেই ইংল্যান্ডকে টেস্ট সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে মিসবাহর দল। তবে মিসবাহ এগিয়ে রাখলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাওয়া সিরিজ জয়টিকে।সোমবার ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মিসবাহ বলেন, “দুটি সিরিজের মধ্যে কোনোটিকে এগিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের বোলিং আক্রমণ যথেষ্ট ভালো ছিলো। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমাদের দলের প্রধান তিন বোলার অনুপস্থিত ছিলো। অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ নিয়ে আমরা অস্ট্রেলিয়াকে যেভাবে বড় ব্যবধানে হারিয়েছি, সেটা বিবেচনায় আনলে আপনি এটাকেই পাকিস্তানের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সেরা অর্জন বলে মেনে নিতে বাধ্য হবেন।”মিসবাহ দলের অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ বলতে মূলত আগের দুই টেস্টের অভিজ্ঞ জুলফিকার বাবর ও অভিষিক্ত ইয়াসির শাহকেই বুঝিয়েছেন। তবে এই দুই স্পিনারের পারফরমেন্স দেখলে বোঝার কোনো উপায়ই নেয় যে এরা অনভিজ্ঞ। অস্ট্রেলীয় ব্যাটিংদের নাকাল করে এই দু’জন ৪০ উইকেটের ২৬টিই নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেনে। জুলফিকার বাবর নেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৪ উইকেট; আর অভিষিক্ত ইয়াসির শাহ নেন ১৩ উইকেট।এদিকে রোববার টেস্টের চতুর্থ দিনে টেস্ট ক্রিকেটের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া পাক দলনায়ক মিসবাহ আবুধাবি টেস্টে জয়লাভ করার মধ্য স্বদেশি দুই কিংবদন্তির পাশে নাম লিখিয়েছেন।আবুধাবি টেস্টে পাওয়া জয়টি পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে মিসবাহর ১৪তম টেস্ট জয়। দুই পাক গ্রেট জাভেদ মিঁয়াদাদ ও ইমরান খানও পাকিস্তানকে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ১৪ টেস্টে জয়ে নেতৃত্ব দেন। সোমবার এই দুই গ্রেটকে স্পর্শ করেন মিসবাহ। এই দুট সাবেক তারকাকে ছাড়িয়ে পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা অধিনায়কের খাতায় নাম লেখানোটা এখন মিসবাহর জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র।তবে একটা জায়গায় মিঁয়াদাদ ও ইমরানকে ছাড়িয়ে গেলেন ‘মিস্টার ফিফটি’ খ্যাত মিসবাহ। পাকিস্তানকে ১৪ টেস্ট জয়ে নেতুত্ব দিতে মিঁয়াদাদ ও ইমরান খানকে যথাক্রমে ৩৪ ও ৪৮ ম্যাচ দলকে নেতৃত্ব দিতে হয়েছিল। অন্যদিকে ৩১তম টেস্টেই এই দুই গ্রেটকে ছুঁয়ে ফেললেন মিসবাহ।
Advertisement