করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই বিশ্বের প্রায় সব দেশ তাদের সীমান্ত পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন দেশের সীমান্তে চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
Advertisement
অনেক দেশই কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পর্যটকদের জন্য তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ পর্যটনখাতের ওপর বহু মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। এসব মানুষ চরম সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছেন।
বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন কয়েক কোটি মানুষ। এমনকি এরই মধ্যে বহু মানুষ চাকরিচ্যুত হয়েছেন। ফলে তাদের জীবিকার একমাত্র পথ বন্ধ হয়ে গেছে, জীবন নিয়ে তাদের যেসব আশা, আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন ছিল তা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।
উদাহরণ হিসেবে আরব আমিরাতের কথাই ধরা যাক। সেখানে যখন থেকে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে গেল তখন থেকেই যেসব অভিবাসীরা বিভিন্ন হোটেলে বা পর্যটনখাতে যুক্ত ছিলেন তাদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন।
Advertisement
চাকরি হারানো এসব বিদেশিদের উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে নিজ দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে। এখানেও বিপদে পড়েছেন তারা। সব হারিয়ে নিঃস্ব এসব লোকজন দেশে ফিরেও যে কাজের সন্ধান পাবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে বিপাকে পড়েছেন লাখ লাখ অভিবাসী। অনেকেই কাজ হারিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেছেন। কিন্তু আরব আমিরাতে ভিক্ষা করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। সে কারণে ইতোমধ্যেই এ কাজে নামা বহু মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিবাসী নীতি নিয়েও কোনো দেশ এখন মাথা ঘামাচ্ছে না। এমনকি তাদের দেশের বিভিন্ন এজেন্ডার মধ্যেও এটি নেই। এছাড়া করোনা মহামারি এখনই শেষ হচ্ছে না। ফলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতেও কিছুটা সময় লাগবে।
এদিকে, অভিবাসীদের নিয়ে কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পর্যটক, ভ্রমণকারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য হয়তো অনেক দেশই ধীরে ধীরে তাদের দরজা উন্মুক্ত করে দেবে। কিন্তু তারা কি অভিবাসীদের জন্যও একই রকমের ব্যবস্থা করবে?
Advertisement
তবে এটা কিছুটা স্পষ্ট যে, কোভিড-১৯য়ের কারণে অনেক দেশই এখন অভিবাসীদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক না। এমনকি ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে বা মহামারি রোধ করা গেলেও হয়তো এই অবস্থা পরিবর্তনে কিছুটা সময় লাগবে।
ফলে লোকজন শুধু এই মহামারি নিয়েই শুধু নয় বরং মহামারি পরবর্তী সময়ে কি হতে যাচ্ছে তা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে। অনেক দেশের স্থায়ী নাগরিকরা মনে করেন যে, অভিবাসীরা তাদের জায়গা নিয়ে নিচ্ছে, তাদের কাজের সুযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। অভিবাসীদের জন্য এটাও বড় ধরনের হুমকি।
অভিবাসীদের নিতে চান না এমন অনেক দেশের রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে অন্যতম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার নির্বাহী আদেশে অভিবাসীদের কাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র কমে আসছে, এমনকি অভিবাসীদের চাকরির ভিসাও স্থগিত করা হয়েছে।
টিটিএন/এমএস