দেশজুড়ে

নওগাঁয় পানির দরে চামড়া

কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে এ বছরও বঞ্চিত নওগাঁর মানুষ। সিন্ডিকেটের কারণে প্রতি বছর গরিব মিসকিনরা যেমন তাদের হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চামড়া ব্যবসায়ীরাও। তাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের এগিয়ে আসার প্রয়োজন বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

জানা গেছে, বোকনা-গাভি গরুর চামড়ার দাম ১৫০-১৭০ টাকা, ৫০-৬০ হাজার টাকা দামের একটি ষাঁড় ও বলদ গরুর চামড়া ৩০০-৪৫০ এবং ৮-১৭ হাজার টাকা দামের একটি ছাগল ও ভেড়ার চামড়ার দাম ১০-৩০ টাকা। বিগত কয়েক বছর আগেও এসব চামড়া বিক্রি হতো হাজারের উপর। কিন্তু গত ২-৩ বছর থেকে সেই চামড়ার দাম বলতে গেলে পানির দরে বিক্রি হচ্ছে।

শনিবার (১ আগস্ট) দুপুরের পর থেকে পশুর চামড়া বিভিন্ন স্থান থেকে নওগাঁ শহরের বালুডাঙা থেকে শুরু করে গোস্তহাটির মোড় পর্যন্ত নিয়ে আসতে থাকে মৌসুমী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তবে এলাকা থেকে তারা যে দামে চামড়া কিনেছেন সে দামে বিক্রি করতে পারছেন না।

চামড়া ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কওমি মাদরাসা ও এতিমখানাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে যে দামে চামড়া কেনা হয়েছে সে দামে বিক্রি করতে পারছি না। প্রতি বছর মিসকিনদের হক নষ্ট করতে একটা সিন্ডিকেট কাজ করে। এতে সাধারণরাও ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতি বছর লোকসান দিতে গিয়ে পুঁজিও শেষ হয়ে গেছে।

Advertisement

নওগাঁ চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ আজাদ হোসেন বলেন, বছরের পর বছর ট্যানারি মালিকরা টাকা আটকে রাখেন। বিগত বছরে গরুর চামড়া প্রায় দেড় হাজার পিস এবং ছাগলের চামড়া প্রায় এক হাজার কিনেছি। সেখানে এ বছর গরুর চামড়া দেড় থেকে দুইশ পিস এবং ছাগলের চামড়া প্রায় আড়াই থেকে তিনশ পিস কিনতে পেরেছি। গ্রামের দিকে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা দাম একটু বেশি পাওয়ার আশায় চামড়া কিনে লবণজাত করে রেখেছে। এ কারণে চামড়ার আমদানি কম পরিলক্ষিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, একটি ছাগলের চামড়া ২০ টাকা দিয়ে কিনে পরিষ্কার করতে শ্রমিক খরচ ২০ টাকা এবং লবণ ১৫-২০ টাকাসহ ৫৫-৬০ টাকা খরচ হয়। আর ১০-১৫ টাকা লাভে তা বিক্রি করতে হয়। অথচ পাশের দেশ ভারতে চামড়ার দাম দুই থেকে তিনগুণ বেশি।

উল্লেখ্য, ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত গরুর চামড়া ধরা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ২৮-৩২ টাকা, যা গত বছর ছিল ৩৫-৪০ টাকা। এ ছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৩-১৫ টাকা এবং বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১০-১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আব্বাস আলী/এএইচ

Advertisement