ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া। তুরস্কের অন্যতম স্থাপত্য নির্দশন। দীর্ঘ ৮৬ বছর পর আদায় করা হয় পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ। প্রত্যেক মুসল্লিকে ঈদের উপহার হিসেবে দেয়া হয় রোপ্য নির্মিত স্মরক। খবর ডেইলি সাবাহ।
Advertisement
দেড় হাজার বছরের ইতিহাসের শুরুতে এটি ছিল গির্জা। পরে তা কিনে মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা হয়। অতপর এটিকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়। সবশেষে গত ২৪ জুলাই জুমআ আদায়ের মাধ্যমে এ ঐতিহাসিক স্থাপনাকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়। আর দ্বিতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় জুমআর দিন সকালে আদায় করা হয় পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ।
ফিরে দেখাতুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি জন্মলগ্ন থেকে কখনও অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের গির্জা, কখনও ক্যাথলিক গির্জা, কখনও মসজিদ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। দেড় হাজার বছর আগে ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে বাইজান্টাইন সম্রাজ্যের অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের সর্ববৃহৎ গির্জা হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়। যা ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত ৯১৬ বছর গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১৪৫৩ সালের শুরুর দিকে সুলতান মোহাম্মাদ ফাতিহ ইস্তাম্বুল বিজয় করেন। তারপর আয়া সোফিয়ার এ স্থাপনাটি কিনে নেন এবং তা মসজিদ হিসেবে ওয়াকফ করে দেন। তারপর থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪৮১ বছর মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
Advertisement
১৯৩৫ সালে আধুনিক তুরস্কের জনক মোস্তফা কামাল (আতাতুর্ক) পাশা এ মসজিদকে বিলুপ্তি ঘোষণা করে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করেন।
তারপর থেকে বিভিন্ন সময় এটিকে মসজিদে রূপান্তরের দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়নে কেউ এগিয়ে আসেনি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পর এ দাবি জোরালো হয়। তিনি এটিকে মসজিদে রূপান্তরের বিষয়ে জনগণের দাবির বিষয়টি আদালতের উপর ন্যস্ত করেন।
দীর্ঘ ৮৬ বছর পর গত ১০ জুলাই তুরস্কের সুপ্রিম কোট ১৯৩৪ সালের নভেম্বরে কামাল আতাতুর্কের জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে আবার তা মসজিদে রূপান্তরের নির্দেশ দেয়। পরে ২৪ জুলাই জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে ফের সেখানে নামাজ শুরু হয়।
গত ২৪ জুলাই জুমআর মাধ্যমে আয়া সোফিয়া নামাজ শুরু হলেও ৩১ জুলাই মোতাবেক দ্বিতীয় জুমআর দিন ৮৬ বছর পর ঐতিহাসিক এ স্থাপনা পড়া হলো পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ।
Advertisement
হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে তুরস্কের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রধান আলি ইরবাসের ইমামতিত্বে ঈদুল আজহা তথা কুরবানি ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ইস্তাম্বুলের স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা মুসল্লিদের জন্য ওয়ান-টাইম জায়নামাজ, জীবাণুনাশক, মাস্ক এবং পানি সরবরাহ করেন। যারা মসজিদে জায়গা না পাননি তাদের জন্য মসজিদে বাইরে বড় ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়।
কুরবানির ঈদের এ দিনে আয়া সোফিয়া অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক নামাজির জন্য ফাতিহ জেলার কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে রূপার তৈরি স্মারক উপহার দেয়া হয়।
এমএমএস/এমএস