করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তীব্র আকারে বৃদ্ধি পাওয়ায় হংকংয়ের পার্লামেন্টের নির্বাচন আগামী এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার করোনা মহামারি মোকাবিলায় নির্বাচন পেছানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের স্বায়ত্ত্বশাসিত এই অঞ্চলের সরকার।
Advertisement
নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছে হংকং। শুক্রবারও সেখানে নতুন করে ১২১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে জনগণকে ভোটদানে বাধা দেয়ার জন্য সরকার মহামারিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। হংকংয়ে নিবন্ধিত ভোটার রয়েছে ৪৪ লাখ।
এর আগে, বৃহস্পতিবার হংকংয়ের সরকার গণতন্ত্রপন্থী ১২ প্রার্থীর আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। বেইজিংয়ের আরোপিত বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের কারণে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে পুঁজি করে আগামী সেপ্টেম্বরের আইন পরিষদের নির্বাচনে বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার আশা করছেন।
হংকংয়ের স্বাধীনতা খর্ব করতে নতুন নিরাপত্তা আইন জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীরা। গত বছরের জেলা পরিষদ নির্বাচনে নজিরবিহীন জয় পায় গণতন্ত্রপন্থী প্রার্থীরা; পরিষদের ১৮ টি আসনের ১৭টিতেই জয় পান তারা।
Advertisement
আগামী নির্বাচন স্থগিত করতে জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগের কথা জানিয়েছেন হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম। তিনি বলেছেন, আমি গত সাত মাসে যত সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তারমধ্যে এটাই ছিল সবচেয়ে কঠিন।
ক্যারি লাম বলেন, পুরোপুরি জননিরাপত্তার স্বার্থে এই নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এর পেছনে কোনও ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। সামাজিক দূরত্ব মানা এবং প্রচার চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বিবেচনায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হংকংয়ে করোনা পরিস্থিতির কি অবস্থা?
চীনের বিশেষ এই অঞ্চলে গত টানা ১০ দিন ধরে গড়ে ১০০ জনের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যদিও হংকংয়ের মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
Advertisement
হংকং করোনাভাইরাস মহামারির লাগাম টেনে সফলতার উদাহরণ তৈরি করছে বলে যখন মনে করা হচ্ছিল ঠিক তখনই নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও সেখানে স্থানীয় কোনও সংক্রমণ ছিল না।
কিন্তু বর্তমানে দেশটিতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি হয়েছে বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। বুধবার ক্যারি লাম বলেছিলেন, বড় ধরনের প্রাদুর্ভাবে দ্বারপ্রান্তে রয়েছে হংকং; যা এই অঞ্চলের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে পুনরায় ব্যবস্থা জোরদার করায় সংক্রমণের গতি ধীর হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে হংকং স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা। হংকংয়ে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২৭ জন। সূত্র: বিবিসি।
এসআইএস/এমএস