পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য হাজার হাজার মানুষ গাজীপুর ছেড়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) বিকেলে গাজীপুরের প্রায় সব পোশাক কারখানায় ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা স্রোতের মতো বাসস্ট্যান্ডে ছুটে যান। হঠাৎ সড়কে যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় পরিবহন সঙ্কটে পড়েন সবাই।
Advertisement
এ অবস্থায় বাস না পেয়ে ট্রাক ও পিকআপসহ ছোট ছোট যানবাহনে গন্তব্যে ছুটে যান যাত্রীরা। শুক্রবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে একই অবস্থায় দুর্ভোগ নিয়ে ঘরে ফিরছে মানুষ। তবে কোথাও মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। ঈদের তিনদিন আগে থেকে মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের ওপর সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকারও পরও এসব পরিবহন চলাচল করছে।
এদিকে, যাত্রীবাহী বাসগুলোতে সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা অনেকটা ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। পুলিশ কোনো যাত্রীবাহী পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে ওই পরিবহনের পেছনে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে এক্ষেত্রে পুলিশকে নিরুপায় থাকতে দেখা গেছে।
মানুষের স্রোতের কারণে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গী স্টেশন রোড, বোর্ড বাজার, গাজীপুরা, তারগাছ, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, মালেকের বাড়ি, বাসন, সালনা, শ্রীপুরের মাওনা ও জৈনাবাজারসহ ব্যস্ততম স্থানগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। চান্দনা চৌরাস্তায় বাস ও ট্রাকে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন যাত্রী।
Advertisement
নেত্রকোনাগামী যাত্রী ইলিয়াস আলী বলেন, বাসে স্থান না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রাকে করে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাচ্ছি। অন্যসময় বাসে ১০০ টাকা নিলেও এখন ট্রাকে দাঁড়িয়ে যেতে দিতে হচ্ছে আড়াইশ টাকা। কিছু করার নেই। বিপদে পড়ে বাড়ি যাচ্ছি।
চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দেখা যায়, স্ত্রী-সন্তান সঙ্গে নিয়ে অনেকে করোনার ঝুঁকির মধ্যে ছোট পিকআপ ও ট্রাকে করে বাড়ি ফিরেছেন। দেখে মনে হয়েছে করোনার সংক্রমণ নেই; পরিবেশ ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মহাসড়কে যানজট নিরসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে চার শতাধিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ যানজট নিরসন এবং পরিবহনের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান উদ্দিন আহমদ বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী গাড়ি চালাতে পরিবহন শ্রমিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সড়কে যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা চেষ্টা করেও যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। এজন্য এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরে স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
Advertisement
আমিনুল ইসলাম/এএম/পিআর