সিলেটে ১২ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রব) এক শিক্ষিকাকে তার স্বামীসহ আটক করেছে পুলিশ। ৩০ জুলাই বিকেলে নগরের আখালিয়াস্থ সুরমা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
Advertisement
আটক এই দম্পতি শাবিপ্রবির একই ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। অভিযুক্ত সাবিনা ইয়াসমিন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তার স্বামী মাহমুদুল হাসান সোহাগ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিদেশি ভাষার প্রশিক্ষক। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর বাবা কাশেম মিয়া বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় বাদী হয়ে আটকদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
জানা গেছে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাবিনা ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তার এলাকার দরিদ্র কাশেম মিয়ার ১২ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে সিলেটের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে আসেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে গৃহকর্মীকে নানা অজুহাতে বেধড়ক মারপিট করে আসছেন সাবিনা ও তার স্বামী মাহমুদুল হাসান।
কয়েকদিন আগে স্টিলের জিআই পাইপ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে শিশুটিকে বাসায় আটকে রাখেন তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘরের দরজা খোলা পেয়ে ওই গৃহকর্মী তাদের বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে পাশের বাসার আরেক গৃহকর্মীর সহযোগিতায় ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে নির্যাতনের কথা জানায়।
Advertisement
খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সেলিম মিঞার নেতৃত্বে একদল পুলিশ নগরের আখালিয়া সুরমা আবাসিক এলাকার ২ নম্বর সড়কের রেনেসা ৩২ নম্বর বাসা থেকে ওই দম্পতিকে আটক এবং শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে সিলেট কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে। পরে নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে ওসমানী হাসপাতালে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে পুলিশ।
মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি মো. সেলিম মিঞা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ পেয়ে সুরমা আবাসিক এলাকা থেকে সাবিনা ইয়াসমিন ও মাহমুদুল হাসান সোহাগ নামের দু’জনকে আটক করেছি। নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মীর শরীরের একাধিক স্থানে জখমের চিহ্ন থাকায় তাকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করার পর তার অভিভাবককে খবর দেই। খবর পেয়ে তার বাবা রাতে থানায় এসে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন।
ছামির মাহমুদ/এমআরএম
Advertisement