করোনাকে জয় করে সবার কাছে মডেল হয়ে উঠেছিল ভিয়েতনাম। কিন্তু গত এপ্রিলের পর তিন মাসের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে আবারও সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।
Advertisement
দেশটিতে প্রথমদিকে সংক্রমণের হার এতো কম ছিল যে, প্রত্যেক রোগীকে আলাদা নাম্বারে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সেখানে ১৭ নম্বর রোগীর মাধ্যমে ইউরোপ থেকে নতুন করে সংক্রমণ শুরু হয়।
অপরদিকে, দেশটিতে ৯১ নম্বর করোনা রোগী ছিলেন একজন ব্রিটিশ পাইলট। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন।
এদিকে, গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় দানাং শহরে নতুন করে আরও একজনের দেহে করোনা শনাক্ত করা গেছে। ওই রোগীর বয়স ৫৭ বছর। তিনি দেশটির ৪১৬ নম্বর করোনা রোগী। গত তিন মাসের মধ্যে এটাই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা।
Advertisement
গত কয়েকদিনের মধ্যেই দানাং সম্পর্কিত মোট ৪৭ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ফলে দেশটিতে তৃতীয়বারের মতো করোনার সংক্রমণ শুরু হয়েছে। বিশ্বের মধ্যে ভিয়েতনামেই করোনার সংক্রমণ কম থাকায় সবার আগে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে।
দেশটি এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, তারা এই প্রাণঘাতী ভাইরাসকে জয় করতে পেরেছে। কিন্তু তাদের এই আত্মবিশ্বাস বেশি সময় টিকতে পারেনি।
দেশটিতে ছয়দিনের মধ্যে ছয়টি শহর ও প্রদেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে হ্যানয়, হো চি মিনহ শহর এবং সেন্ট্রাল হাইল্যান্ড শহরও আছে।
এদিকে, দানাং শহর থেকে প্রায় ৮০ হাজার পর্যটককে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সোমবার দেশটির সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে দানাং শহর থেকে প্রায় ৮০ হাজার পর্যটককে সরিয়ে নিতে সময় লাগবে চারদিন। প্রত্যেকদিন অন্তত ১০০টি ফ্লাইটে এই পর্যটকদের দেশের ১১টি শহরে পৌঁছে দেয়া হবে।
Advertisement
নতুন করে করোনায় আক্রান্তদের সবাই দানাং শহরের হওয়ায় সেখানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে পুনরায় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের প্রতিবেশি হওয়া স্বত্ত্বেও প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর আগ্রাসী ও বিস্তৃত পরিসরের পরীক্ষা, কোয়ারেন্টাইন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় দেশটির সরকার শুরুতেই এই ভাইরাসের লাগাম টেনে এশিয়ায় সফলতার উদাহরণ তৈরি করে।
এদিকে, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী গুয়েন জুয়ান ফুক বলেছেন, পুরো দেশই সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।
দেশটিতে সংক্রমণ কমে যাওয়ায় অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছে না আবার কিছু স্বাস্থ্য কর্মীও এই ভাইরাসের সংক্রমণের যে উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
এদিকে ভিয়েতনামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশটির প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হো চি মিন সিটিতে সব বার ও নাইটক্লাব বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে ৩০ জনের বেশি লোক একসাথে সমবেত হওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাজধানী হ্যানয়েও একই রকমের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
টিটিএন/এমআরএম