আইন-আদালত

প্রশ্নফাঁস : দুইজনের দায় স্বীকার, একজন আবারও রিমান্ডে

সরকারি মেডিকেল, ডেন্টাল ও আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন পারভেজ খান ও জাকির হোসেন। অপরদিকে জসিমউদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নুর আবারও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) সাত দিনের রিমান্ড শেষে তাদের তিনজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। পারভেজ খান ও জাকির হোসেন স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী আবু সাঈদ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারী তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অপরদিকে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য জসিমকে আবারও সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ২৩ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা (ভার্চুয়াল আদালত) তিনজনের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওইদিন কারাগার থেকে ভার্চুয়াল আদালতে তাদের উপস্থিত দেখানো হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় মিরপুর থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক তাদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Advertisement

ওইদিন সিআইডির সদরদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির সাইবার ক্রাইমের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সুমন কুমার দাস জানান, গত ২০ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তখন প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতা জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করে সিআইডি।

তিনি জানান, ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। এ ঘটনায় করা মামলায় ১২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় সিআইডি, যার মধ্যে গ্রেফতার ছিল ৪৭ জন। তাদের মধ্যে ৪৬ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলা তদন্তকালে ২০১৮ সালে একটি চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি। গত ১৯ জুলাই পুলিশ এস এম সানােয়ার হােসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৭ সালের মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য দেন।

তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলামের তত্ত্বাবধায়নে একটি দল ওইদিনই মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্না, পারভেজ খান ও জাকির হাসান দিপুকে গ্রেফতার করে। আসামিরা একটি সংঘবদ্ধচক্র হিসেবে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছাপাখানা থেকে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করত।

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের এই ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় গত ২০ জুলাই এজাহারনামীয় ১৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা করে সিআইডি। তাদের মধ্যে জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ২৭ লাখ সঞ্চয়পত্র, দুই কোটি ৩০ লাখ চেক এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

জেএ/বিএ/এমএস