এক বছর থেমে থেকে পদ্মা নদী আবার আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। পদ্মার প্রবল স্রোতের তোড়ে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা ইউনিয়নের ৮১ নং বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি একতলা ভবন বুধবার (২৯ জুলাই) দুপুরে মুহূর্তেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়ের অপর দ্বিতল ভবনটিও। এছাড়া চারটি মসজিদ, একটি নুরানী মাদরাসাসহ জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার ৪৯৮টি বসতবাড়ি পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
Advertisement
এদিকে স্রোতের তোড়ে বুধবার চরআত্রা ইউনিয়নের বসাকেরচরের ৫০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজানের পানি নামতে শুরু করার পর থেকেই পদ্মাবেষ্টিত জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। বুধবার দুপুর ২টার দিকে নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা ইউনিয়নের বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা একটি পাকা ভবন মুহূর্তের মধ্যেই নদীগর্ভে চলে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ওই বিদ্যালয়ের ৩০ গজ দূরত্বে থাকা দ্বিতল অন্য ভবনটিও।
বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, পদ্মার দুর্গম চরাঞ্চলের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে ১৯৪২ সালে নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা ইউনিয়নের ৮১ নং বসাকেরচর স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিলীন হওয়া ভবনটি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। এই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ভবনটিও নদীগর্ভে বিলীন হলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে ৩৭৫ জন কোমলমতি শিশুর শিক্ষাজীবন।
Advertisement
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফ উজ্জামান ভূঁইয়া জানান, পদ্মার প্রবল স্রোতে এ যাবত জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, বড়কান্দি ও নাওডোবা ইউনিয়নের ৪০৩টি বসতবাড়িসহ অনেক ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ভাঙনকবলিতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়ন্তী রুপা রায় জানান, এর আগে আরও ৪৫টি বসতবাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। ভাঙনকবলিতদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার প্রক্রিয়া চলমান।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, পদ্মার স্রোত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে স্কুল ভবনটি রক্ষার জন্য জিওব্যাগ ডাম্পিং করেছিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বর্ষা মৌসুম চলে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালু রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
ছগির হোসেন/আরএআর/এমকেএইচ
Advertisement