বহির্বিশ্বে দলকে চাঙা করতে লন্ডনে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা ভেস্তে গেছে। কি কারণে পূর্বঘোষিত এই সমাবেশ বাতিল করা হয়েছে তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে দলের ভেতরে এবং বাইরে। জানা গেছে, দলীয় বিশৃঙ্খলা আর সমন্বয়হীনতার কারণেই মূলত বাতিল করা হয়েছে বিএনপির সমাবেশ। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। সমাবেশ না হওয়ার পেছনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতাজনিত কারণকে সামনে আনা হলেও মূলত নানা রকম বিশৃঙ্খলার কারণেই সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়নি বলে অনেকে দাবি করেছেন। তবে কি কারণে সমাবেশটি বাতিল হয়েছে তার কোনো স্পষ্ট ব্যাখা দেয়নি লন্ডন বিএনপির নেতারা। বিষয়টি নিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করছেন তারা। এর আগে সমাবেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য বিএনপি বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি বৈঠক করেছিল। জানা গেছে, সমাবেশ কত তারিখ কোথায় অনুষ্ঠিত হবে তা গোপন রাখা হয়। এমনকি প্রস্তুতি বৈঠকে উপস্থিত সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদকদেরও নিদিষ্ট তারিখ কিংবা সমাবেশস্থলের নাম বলেননি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তবে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমকে ২৭ অক্টোবর লন্ডনে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছিলেন। এতে বিভিন্ন দেশের বিএনপির নেত্রীবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন বলেও জানান তিনি। এদিকে, যে স্থানে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল সেই স্থানে সরকার সমর্থক তথা লন্ডনে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে বিএনপির সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সমাবেশ না হওয়ার পেছনে এটাও একটা কারণ হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা। জানা গেছে, এই সমাবেশ আর না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়া সমাবেশ করবেন না বলে নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন।কেন বহু প্রতিক্ষিত লন্ডন সমাবেশ বাতিল হলো সে সম্পর্কে দলের দায়িত্বশীল একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে জানান, সমাবেশ উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট নন বেগম জিয়া। তিনি বলেছেন, তাদের মধ্যে শৃংখলা নেই। এর আগে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছিলো তা নির্ধারিত সমাবেশে বড় আকারে হতে পারে। বেগম জিয়া ওই বিশৃঙ্খলার ঘটনায় বিরক্ত।এদিকে, লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সহসা দেশে ফিরছেন না বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। তিনি কবে ফিরবেন তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, আরেকটি সূত্র বলছে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফিরতে পারেন বেগম জিয়া। বিএনপির লন্ডন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নিজের সুস্থ হওয়া নিয়ে চিন্তিত খালেদা। তবে কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছেন যদি পায়ের অপারেশন করালে নিউইয়র্কের যে হাসপাতালে আগে চিকিৎসা নিয়েছেন সেখানেই করাতে। এর আগে ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে তিনি সেখানকার একটি হাসপাতালে পায়ের চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ফলে অনেকদিন ভালো ছিলেন। তবে বর্তমানে তার পায়ের ব্যথা বেড়েছে। হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে।উল্লেখ্য, ১৫ দিনের সফরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে লন্ডন যান। কিন্তু চিকিৎসা শেষে যথাসময়ে দেশে ফেরেননি তিনি। ইতোমধ্যে সেখানে তার অবস্থান ৪৩ দিন পেরিয়েছে। খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরবেন এ বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছেও কোনো তথ্য নেই। এসব নেতারা বলছেন এটা খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সফর। চিকিৎসা শেষ হলেই তিনি দেশে ফিরে আসবেন। এমএম/এসকেডি/একে/আরআইপি
Advertisement