জাতীয়

পশুর হাটে মেয়র আতিকুল

ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করে সবার মধ্যে। তবে এ বছর পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে এবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পশুর হাট বসছে। রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি-না, তার খোঁজ-খবর নিতে মঙ্গলবার দুপুরে ভাটারা সাইদনগরে মনিটরিং টিমসহ পশুর হাট পরিদর্শন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি হাটে ঢুকে সার্বিক বিষয় খোঁজ-খবর নেন। ক্রেতা, বিক্রেতা, ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনাও দেন মেয়র।

পরিদর্শনকালে আতিকুল ইসলাম বলেন, এই পরিস্থিতির মধ্যে আমরা হাট কমিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। যদিও এটি পরিপূর্ণ পালন করানো একটি চ্যালেঞ্জ। তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। হাটে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার, মাস্ক পরিধানসহ সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সবার সম্মিলিত চেষ্টা ছাড়া এটা বাস্তবায়ন করানো কঠিন হবে।

আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশুর প্রতিটি হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। স্বাস্থ্যবিধি ও অন্যান্য শর্ত মেনে চলছে কি-না তা নিশ্চিত করতে একটি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

Advertisement

জানা গেছে, এবার ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ১৭টি স্থানে পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে ডিএনসিসি এলাকায় ৬টি পশুর হাট বসবে। তার মধ্যে একটি স্থায়ী হাট ও ৫টি অস্থায়ী। স্থায়ী হাটটি বসবে গাবতলীতে। অস্থায়ী হাটগুলো বসবে উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ ভবন পর্যন্ত খালি জায়গায়, কাওলা শিয়াল ডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গায়, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গায়, ভাটারা (সাইদ নগর) পশুর হাট এবং উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গায়।

পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি এবং অন্যান্য শর্ত সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না তা মনিটরিংয়ের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমানকে।

করোনা সংক্রমণ রোধে হাটের ইজারাদারদের ইজারা প্রদত্ত অস্থায়ী পশুর হাটে বাধ্যতামূলকভাবে বেশকিছু ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে হাটের প্রবেশ পথে টিভি স্ক্রিনযুক্ত থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে প্রবেশকারীর শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে হবে। গায়ে জ্বর থাকলে কাউকে হাটে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। হাটে প্রত্যেক প্রবেশকারীকে হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, ক্যাপ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে হাটে প্রবেশ করতে হবে।

করোনা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি সংবলিত ব্যানার ও পোস্টার টাঙানোসহ এসব বিষয়ে মাইকে ধারাবাহিকভাবে প্রচার করতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে হাটের সর্বত্র ও আশপাশের সংশ্লিষ্ট জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হাটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাবান, পানির ড্রাম ও বেসিন রাখতে হবে।

Advertisement

হাটে প্রবেশ এবং বহির্গমনের জন্য পৃথক পৃথক গেট করতে হবে এবং নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাটে প্রবেশ ও বের হতে হবে। একাধিক প্রবেশ পথ হলে প্রত্যেক প্রবেশ পথেই টিভি স্ক্রিনযুক্ত থার্মাল স্ক্যানার বসাতে হবে। বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিকে হাটে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের নিমিত্তে করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো স্ক্রিনে সার্বক্ষণিকভাবে দেখাতে হবে। ইজারাদারকে হাটের জন্য প্রশিক্ষিত ও স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরি করতে হবে। ক্রেতা সঙ্গে করে অনেক লোক নিয়ে হাটে আসা যাবে না এবং ক্রেতাকে নির্ধারিত দূরত্ব থেকে পশু দেখতে হবে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ে উৎসাহিত করতে হবে। হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন স্থাপন করতে হবে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত মেডিকেল বর্জ্য যেমন- গ্লাভস, মাস্ক, হেড কাভার, স্যানিটাইজার বোতল রাখার জন্য পৃথক ডাস্টবিন রাখতে হবে। সর্বোপরি স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন নিশ্চিত করতে হবে।

এএস/এমএসএইচ/পিআর