মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ধাক্কায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বাটা সু লোকসানের খাতায় নাম লেখিয়েছে। এক ধাক্কায় চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৪ টাকা।
Advertisement
বাটা সু’র পরিচালনা পর্ষদ সভা শেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস কোম্পানিটির ব্যবসায় এতোটাই প্রভাব ফেলেছে যে, আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১৫ শতাংশ আয় হয়েছে, অর্থাৎ ৮৫ শতাংশ বিক্রি কমেছে। বাংলাদেশের বাজারে দাপটের সঙ্গে চামড়া জুতা, সু’র ব্যবসা করা কোম্পানিটি আগে কখনো এমন সমস্যায় পড়েনি।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।
Advertisement
ফলে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক ছিল দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়। এ সময়ে প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আগে করোনার এই প্রকোপ ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটায় ভাটা ফেলে। ফলে ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা করা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
বাটা সু কর্তৃপক্ষের বক্তব্যেও সেই তথ্য উঠে এসেছে। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বড় লোকসানে পড়ার কারণ হিসেবে বাটা সু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাধারণত ব্যবসার ২৫ শতাংশ আসে ঈদকেন্দ্রিক এবং উচ্চমূল্যের পণ্য বেশি বিক্রি হয়। যা উচ্চ মুনাফা দেয়। কিন্তু মহামারি করোনার কারণে এ সুযোগ এবার হাতছাড়া হয়ে গেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার মাত্র ১৫ শতাংশ আয় হয়েছে।
ডিএসইকে দেয়া কোম্পানিটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫৩ টাকা ৭৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১৫ টাকা ৮৫ পয়সা।
Advertisement
দ্বিতীয় প্রান্তিকে বড় লোকসান করায় ছয় মাসের হিসাবেও কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫১ টাকা ৬৭ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১৯ টাকা ১১ পয়সা।
লোকসানের খাতায় নাম লেখানোর পাশাপাশি কোম্পানিটির সম্পদমূল্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৩১২ টাকা ৯৮ পয়সা, যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ৩৬৪ টাকা ৬৫ পয়সা।
এদিকে নগদ অর্থ সংকটেও পড়েছে বহুজাতিক এই কোম্পানি। অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৫ টাকা ৮৫ পয়সা। ২০১৯ সালের সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ৪৩ টাকা ৪৮ পয়সা।
এমএএস/এইচএ/জেআইএম