জাতীয়

মাইকে বাজছে শিশু প্রবেশ নিষেধ, বাস্তবে হাটে শিশুরাই বেশি!

করোনা সংক্রমণের মধ্যেও প্রয়োজনের তাগিদেই বসছে পশুর হাট। এর জন্য সরকার ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বারবার স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বিষয়ে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করতেও বলা হয়েছে। তাইতো রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রহমতগঞ্জ খেলার মাঠের পশুর হাটের চৌহদ্দিতে মাইকে বলা হচ্ছে, করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গবাদিপশু বেচাকেনা করতে হবে। বয়স্ক ও শিশুরা হাটে আসবে ইত্যাদি সতর্কতামূলক কথাবার্তা।

Advertisement

কিন্তু হাটে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, ভিন্ন চিত্র। ক্লাব মাঠের ভেতর শিশুদের সংখ্যাই বেশি। মুখে মাস্ক না পরেই তারা মনের আনন্দে হাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দাঁড়িয়ে গরু দেখছে, শান্তশিষ্ট গরুগুলোর মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করছে।

এদিকে, রাজধানীর হাটগুলোতে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাকেনা শুরু না হলেও কৌতূহলী ক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে। গরু ব্যাপারীরা জানান, এখনও বেচাকেনা শুরু হয়নি। যারা আসছেন তারা দাম জেনে চলে যাচ্ছেন। আগামী দু-একদিনের মধ্যে বেচাকেনা শুরু হয়ে যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

রোববার (২৬ জুলাই) দুপুরে রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ক্লাব মাঠের অর্ধেকেরও বেশি অংশ ছোটবড় দেশি ও ক্রস প্রজাতির গরুতে ভরে গেছে। ব্যাপারীদের কেউ গরুকে খাওয়াচ্ছেন, কেউ ঘুমাচ্ছেন, রান্না করছেন আবার অনেকে দলবেঁধে লুডু খেলছেন।

Advertisement

ব্যাপারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠে আসা ৯০ শতাংশ গরুই কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার। এর মধ্যে অনেকেই নিজের লালন-পালন করা পশুটি নিয়ে হাটে এসেছেন। আবার অনেকে স্থানীয় হাট থেকে কিনে নিয়ে ঢাকায় আসেন। বিভিন্ন আকৃতির দেশি ও ক্রস প্রজাতির গরু সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থেকে ৫-৬ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকানো হচ্ছে।

এবার বাজার কেমন যাবে- জানতে চাইলে আজমত আলী নামে এক ব্যাপারী জানান, এবার হাটে গরু কম উঠেছে। গত বছর তারা কয়েকজন মিলে ১০ ট্রাক গরু নিয়ে এলেও এবার করোনার কারণে মাত্র তিন ট্রাক গরু নিয়ে এসেছেন। তিনি আশা করছেন, গরু কম ওঠায় বেচাকেনা ভালো হবে।

আবদুর রাজ্জাক নামের আরেক ব্যাপারী জানান, নিজে লালন-পালন করা ১০টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন। বেশ মোটাতাজা দুটি গরু তিন লাখ টাকা দাম চাইলেন। জানালেন, গরুগুলো কেনা থেকে শুরু করে লালন-পালন করে বড় করতে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া কিছু ছোট আকৃতির গরুও নিয়ে এসেছেন তিনি। এগুলো ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবেন। এবার গরু বেচা না হলে আর রহমতগঞ্জের হাটে আসবেন না বলেও জানান এ ব্যাপারী।

রহমতগঞ্জ ক্লাবের এক কর্মকর্তা জানান, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাকেনা শুরু হয়নি। হাসিল ঘর বসানোর কাজ শেষের পথে। সরকারি নিয়ম মেনে ৫ দিন আগে থেকে হাট শুরু হবে।

Advertisement

হাটে শিশুদের কেন প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে হাট শুরু না হওয়ায় পাড়া মহল্লার পোলাপানরা শখ করে গরু দেখতে আসতেছে।’

এমইউ/এফআর/জেআইএম