অর্থনীতি

রেকিট বেনকিজারের জন্য ‘আশীর্বাদ’ করোনা

মহামারি করোনাভাইরাস ‘আশীর্বাদ’ হয়ে এসেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজারের জন্য। করোনা মহামারির মধ্যে কোম্পানিটির মুনাফা ফুলে ফেঁপে উঠেছে।

Advertisement

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে জনজীবন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও সব প্রতিষ্ঠানের ওপর যে এর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেনি রেকিট বেনকিজার তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

করোনা মহামারির কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সব থেকে খারাপ সময় গেছে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে। অথচ এই প্রান্তিকেই রেকিট বেনকিজারের মুনাফা গত বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভা শেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে মুনাফার এ তথ্য জানা গেছে। সোমবার (২৭ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

Advertisement

মুনাফায় এমন প্রবৃদ্ধি হওয়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহামারির কারণে পার্সোনাল হাইজেনিং (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী) পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে মুনাফার শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। ফলে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে।

সাধারণ ছুটির মধ্যে সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা থাকলেও করোনার ছোবল পড়েছে প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে আসায় এপ্রিল-জুন এই তিন মাসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের মুনাফায় ধাক্কা লেগেছে।

তবে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিক্রি মহামারি মধ্যে বেড়ে যায়। ফলে করোনা থেকে রক্ষায় ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসা করা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আশীর্বাদ হিসেবেই দেখা দেয়।

Advertisement

ডেটল, মরটিন, হারপিক, ভ্যানিশ, লাইজল ও ভিটসহ কয়েকটি প্রসাধনী পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করছে রেকিট বেনকিজার। প্রতিবছরই ভালো মুনাফা করায় নিয়মিত শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

মহামারি করোনার মধ্যে মুনাফায় উল্লম্ফনের পাশাপাশি কোম্পানিটির লভ্যাংশের ক্ষেত্রেও উল্লম্ফন দেখা গেছে। ২০১৯ সালের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের রেকর্ড এক হাজার ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

এদিকে চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩৩ টাকা ৪৭ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ২১ টাকা ৮২ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ১১ টাকা ৬৫ পয়সা।

এপ্রিল-জুনের মতো জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকেও কোম্পানিটির ব্যবসা ছিল রমরমা। এতে বছরের প্রথম ৬ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৫৭ টাকা ৫১ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ৩৭ টাকা ২৮ পয়সা।

মুনাফার পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যও আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২০০ টাকা ১৫ পয়সা, যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ১৪২ টাকা ৬৪ পয়সা।

এদিকে অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২১১ টাকা ৯৮ পয়সা, যা ২০১৯ সালের সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে ছিল ৭২ টাকা ২২ পয়সা।

এমএএস/এফআর/জেআইএম