আন্তর্জাতিক

হায়া সোফিয়ায় থাকতে পারবে বিড়াল ‘গ্লি’

এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা থেকে মসজিদ পরে জাদুঘরে রূপান্তরিত হওয়া দেড় হাজার বছরের পুরনো হায়া সোফিয়াকে সম্প্রতি আবারও মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছে। তুরস্কের ঐতিহাসিক এই মসজিদে শুক্রবার ৮৬ বছর পর প্রথমবারের মতো হাজারও মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছেন।

Advertisement

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের হায়া সোফিয়া বদলে গেলেও গ্লি নামের একটি বিড়ালকে সেখান থেকে বের করে দেয়া হবে না। সে থাকবে সেখানেই। ইনস্টাগ্রামে গ্লির হাজারও ফলোয়ার আছেন। এমনকি সাবেক এক মার্কিন প্রেসিডেন্টও তার ভক্ত।

হায়া সোফিয়ার গ্লি নামের বিড়ালটি বিশ্বজুড়েই বিখ্যাত। কিন্তু সম্প্রতি এই ঐতিহাসিক স্থাপনা মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্তের পর অনেকেই ভাবছিলেন গ্লি-র ভাগ্যে কী ঘটবে। স্থানীয় পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হচ্ছিল।

হায়া সোফিয়া জাদুঘর থাকার সময় ধুসর রঙের শরীর ও সবুজ জ্বল জ্বলে চোখের গ্লি অনেক দর্শনার্থীর প্রিয় হয়ে ওঠে। এমনকি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০০৯ সালে এক সফরে গ্লির সঙ্গে ছবি তোলেন।

Advertisement

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বিড়ালটি এখনও সেখানেই থাকবে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন রয়টার্সকে বলেন, গ্লিসহ যেসব বিড়াল এ জায়গাটিতে আছে, তারা এখানেই থাকবে।

তিনি বলেন, ‘এই বিড়ালটি অনেক বিখ্যাত হয়ে গেছে এবং আরও বিড়াল আছে যেগুলো ততটা বিখ্যাত নয়। এই বিড়ালটি তো থাকছেই, অন্য বিড়ালগুলোও আমাদের মসজিদে থাকতে পারবে।’

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডিডব্লিউ বলছে, উমুত বাহচেচির কাছে এটি সুখবর হয়ে এসেছে, যিনি চার বছর ধরে গ্লির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি চালাচ্ছেন। চার বছর আগে তিনি এটি শুরু করেন এবং এখন এর ফলোয়ার ৪৮ হাজার। অ্যাকাউন্টটি বিড়ালটির ছবিতে ভরা।এমনকি দর্শনার্থীরাও তাদের তোলা ছবি ট্যাগ করেছেন।

‘আমি যখনই হায়া সোফিয়ায় যেতাম গ্লিকে দেখতাম। সে মডেলের মতো পোজ দিতো। মানুষ লিখতো, গ্লি তোমাকে দেখতে ইস্তানবুলে আসবো। খুব ভালো লাগতো।’

Advertisement

প্রায় দেড় হাজার বছর আগে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের প্রধান গির্জা (ক্যাথেড্রাল) হিসেবে হায়া সোফিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েক শতাব্দী পর অটোমান শাসকরা এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ তুর্কি সরকার। ১৯৮৫ সালে জাদুঘর হায়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা ঘোষণা করে ইউনেস্কো।

গত ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরের মর্যাদা বাতিল করে মসজিদে রূপান্তরের আদেশ দেন। মসজিদ ছাড়া অন্যকিছু হিসেবে এটির ব্যবহারকে অবৈধ বলেও জানান আদালত। এরপর ৮৬ বছর পর প্রথমবারের মতো সেখানে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

এসআইএস/এমকেএইচ