আইন-আদালত

‘স্যার আমি অপরাধ করেছি, ব্যবসা চালু হলে টাকা ফেরত দেব’

রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদ রিমান্ড শুনানি চলাকালে বিচারককে বলেন, ‘স্যার আমি অপরাধ করেছি। ব্যবসা চালু হলে আস্তে আস্তে সবার টাকা ফেরত দিয়ে দেব।’

Advertisement

আজ রোববার (২৬ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে রিমান্ড শুনানি চলাকালে বিচারক বক্তব্য জানতে চাইলে সাহেদ এসব কথা বলেন।

সাহেদ বলেন, ‘আমি ও মাসুদ দুজনই অপরাধী। আমার বিরুদ্ধে মামলার রিমান্ড শুনানি ঈদের পর হলে ভালো হয়। কয়দিন ধরে রিমান্ডে আছি। আমি অসুস্থ।’

আজ চার মামলায় সাহেদের সাত দিন করে ২৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজের তিন মামলায় সাত দিন করে ২১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

Advertisement

উত্তরা পশ্চিম থানার প্রতারণার মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে আজ সাহেদকে আদালতে হাজির করা হয়। তখন আইনজীবী জামিন চান। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু তার জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘সাহেদ মানুষের জীবন নিয়ে প্রতারণা করেছেন। তিনি একজন মহাপ্রতারক। আমরা তার জামিনের বিরোধিতা করছি।’

এরপর চার মামলার রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘সাহেদ প্রতারক। তিনি মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন। চার মামলায় ৪০ দিনের রিমান্ড নেয়া প্রয়োজন।’

অন্যদিকে মাসুদের উত্তরা পশ্চিম থানায় দুই ও উত্তরা পূর্ব থানায় প্রতারণার এক মামলায় ১০ দিন করে ৩০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।

এর আগে গত ১৬ জুলাই সাহেদ-মাসুদ ও তরিকুলকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তিনজনের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক এস এম গাফফার আলম। অন্যদিকে তাদের আইনজীবী নাজমুল হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে সাহেদ ও মাসুদের ১০ দিনের এবং তরিকুলের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জসিম।

Advertisement

তারও আগে করোনা চিকিৎসায় রিজেন্ট হাসপাতালের ভয়াবহ জালিয়াতি ধরা পড়ার পর ৮ জুলাই গ্রেফতার হন তরিকুল। ১০ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। মামলার ২ নম্বর আসামি মাসুদ পারভেজকে গাজীপুর থেকে গত ১৪ জুলাই গ্রেফতার করে র‌্যাব।

গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। পরদিন ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় দণ্ডবিধি ৪০৬/৪১৭/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১/২৬৯ ধারায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। পরে মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।

জেএ/জেডএ/পিআর