সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো ঈদ উল আজহার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে লন্ডন যাবেন সাকিব আল হাসান। সেখানে অন্তত মাস দেড়েক অবস্থান করে নিজেকে যতটা সম্ভব তৈরি করে ফেলার কাজে মনোযোগী হবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। লন্ডনে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফিটনেস ও স্কিল ট্রেনিংও করবেন।
Advertisement
এরপর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহে কিংবা অক্টোবরের প্রথম দিকে দেশে ফিরতে পারেন সাকিব আল হাসান- সে খবরও জাগো নিউজের পাঠকরা জেনে গেছেন। এ খবর মোটামুটি চাউরও হয়ে গেছে।
তবে তা অনেকখানি নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির ওপর। বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতির উল্লেখ্যযোগ্য উন্নতি হলেই কেবল সেপ্টেম্বরের শেষদিকে দেশে ফেরত আসার সম্ভাবনা আছে সাকিবের।
এখন প্রশ্ন হলো-সত্যিই যদি করোনার ভয়াবহতা কমে যায়, পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, তাহলে ২৯ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা মুক্তির আগে দেশে ফিরে কী করবেন সাকিব? নিয়ম অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওঠার একদিন আগেও তার পক্ষে জাতীয় দল কিংবা কোনো ক্লাবের পক্ষে অনুশীলন করা সম্ভব হবে না।
Advertisement
তাহলে দেশে ফিরে সাকিব কোথায় কিভাবে অনুশীলন করবেন? একদম ভেতরের খবর, যুক্তরাষ্ট্র-লন্ডন হয়ে দেশে ফেরত আসার পর আবারও গুরু মোহাম্মদ সালাউদ্দীনের সাহচর্যে চলে যাবেন সাকিব।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বিকেএসপি জীবন থেকেই সাকিবের সঙ্গে অন্যরকম সখ্য মোহাম্মদ সালাউদ্দীনের। যে কোনো সমস্যা, অফ ফর্ম, টেকনিক্যাল ও ছোট খাটো সূক্ষ্ম ভুল ত্রুটি শুধরে নিতে সাকিব বিগত দিনেও কোচ সালাউদ্দীনের শরনাপন্ন হয়েছেন।
গত বছর আইপিএল খেলা চলাকালীন দেশ থেকে নিজ গরজে ও খরচে প্রিয় গুরু ও মেন্টর ‘সালাউদ্দীন স্যার’কে ঢাকা থেকে হায়দরাবাদে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সাকিব। তাকে সেই বিকেএসপির ছাত্র থাকা অবস্থা থেকে খুব ভালোভাবে চেনা সালাউদ্দীন ছাড়া কেউবা সব সমস্যার খুঁটিনাটি সমাধান দিতে পারবেন!
সেবার হায়দরাবাদে সালাউদ্দীনের তত্ত্বাবধানে ব্যাটিং-বোলিং প্র্যাকটিস করেছিলেন সাকিব। তার কিছু কার্যকর পরামর্শ ও সূক্ষ্ম কিছু টিপস নিয়েই বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য রকমের ভালো খেলেছিলেন সাকিব। ক্যারিয়ারের সেরা ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়ে বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি আর ৫ হাফসেঞ্চুুরিসহ ৬০৫ রান করে আসরের অন্যতম সেরা পারফরমার ছিলেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার।
Advertisement
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার আগে দেশের মাটিতে আবার সেই কোচ সালাউদ্দীনের নিবিড় পরিচর্যায় কিছু সময় কাটাতে চান সাকিব। ভেতরের খবর, কোচ সালাউদ্দীনের সাথে তার এ নিয়ে তার কথাও হয়েছে।
সালাউদ্দীন তা বাইরে প্রকাশ না করলেও খুব ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা সাকিব দেশে ফিরে একান্ত অনুশীলনের কথা জানিয়েছেন কোচকে। বিকেএসপিতে সপ্তাহ খানেক থেকে দিন দশেকের একটা কার্যকর প্র্যাকটিস সেশন করার প্রস্তাবও নাকি এসেছে সাকিবের পক্ষ থেকে।
এই বিষয়ে সালাউদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে জানান, ‘আসলে এটা এখনো চূড়ান্ত নয়। সাকিব দেশে ফিরে অবশ্যই পুরোদমে অনুশীলন করবে। তার আগে বিকেএসপিতে আমার সাথে কয়েকটা দিন একান্তে কাটানোর ইচ্ছেও প্রকাশ করেছে। তবে সেটা আরও আগে।’
সে ইচ্ছে বাস্তব রূপ পাবে কি না, এখনই তা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন সালাউদ্দীন। তার ব্যাখ্যা, ‘প্রথমত, করোনা একটা ভাইটাল ফ্যাক্টর। করোনা পরিস্থিতি ভালো হয়ে গেলে অনেক কিছুই সম্ভব। আর করোনা পরিস্থিতি এখনকার মত থাকলে কিংবা অবনতি ঘটলে বিকেএসপিতে এসে ব্যক্তিগত ট্রেনিং সেশনের প্রশ্নই আসে না। আমরা যারা বিকেএসপি থাকি, আমাদেরই বিকেএসপি থেকে চার মাস বাইরে বের হবার অনুমতি মিলছে না। সেখানে আর কারো পক্ষে বাইরে থেকে এসে এখানে থেকে অনুশীলন করার অনুমতি মেলাও কঠিন।’
সলাউদ্দীন ভেঙে বলেই দিয়েছেন, ‘মানছি সাকিব বিকেএসপির সাবেক ছাত্র। দেশের ক্রিকেটের অনেক বড় তারকা। কিন্তু বিকেএসপি তো আর নিয়ম ভেঙে করোনার এ অবস্থায় বাইরে থেকে কাউকে এখানে থাকার অনুমতি দেবে না।’
কাজেই সাকিবের বিকেএসপিতে নিবিড় ট্রেনিং সেশন কাটানোটা নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির ওপর। সালাউদ্নি বলেন, ‘সাকিব যখন দেশে ফিরে আসবে, ততদিনে যদি করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে, তাহলে কয়েকটা দিন তার বিকেএসপিতে নিবিড় অনূশীলন করার সম্ভাবনা আছে। তবে সেটা বেশ কিছু যদি-তবের ওপর নির্ভর করবে।’
এআরবি/এমএমআর/এমকেএইচ