বিনোদন

করোনা মারতে পারবে না, অভাবে না খেয়েই মরবো : কাঙালিনী সুফিয়া

অনেকদিন ধরেই নানারকম শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন লোক গানের কিংবদন্তি শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া। চিকিৎসার ব্যয় চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারউপর সংসার নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। করোনার এই ক্রান্তিকালে কোথাও নেই গানের শো। তার পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরাও বেকার দিন যাপন করছেন। যার কারণে প্রায় না খেয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে তাকে।

Advertisement

সেজন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন ‘বুড়ি হইলাম তোর কারণে’ গানের এই শিল্পী। তিনি জানিয়েছেন, করোনায় দিনগুলো খুবই অমানবিক যাচ্ছে তার। সংসার-সন্তানদের নিয়ে দুচোখে অন্ধকার দেখছেন।

কাঙালিনী সুফিয়া কান্নামাখা কণ্ঠে বলেন, ‘এই করোনায় কীভাবে আমি বাঁচব সন্তানদের নিয়া! এক টাকা আয় নাই। সামনে ঈদ। কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি নে। কুষ্টিয়াও যেতে পারছি নে। করোনা তো আমারে মারতে পারবে না, এখন দেখছি না খেয়েই মরতে হবে।’

গীতিকার গোলাম রাব্বানির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন কাঙালিনী সুফিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘অভাব আর দারিদ্র কাঙালিনী সুফিয়াকে একেবারে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। যোগাযোগ করলেই কান্নাকাটি করেন। মন খারাপ হয়ে আসে। আমি অনুরোধ করবো যদি কেউ চান এই মানুষটির পাশে দাঁড়াবেন তবে চেষ্টা করুন। যেভাবে যতটুকু নিয়েই পারা যায় তার পাশে থাকুন।’

Advertisement

কাঙালিনী সুফিয়া প্রধানমন্ত্রীরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার না খেয়ে থাকার খবরটা প্রধানমন্ত্রীরে জানাইও।’

সেইসঙ্গে তিনি নিজের ব্যবহার করা একটি বিকাশ নম্বর দিয়েছেন। যদি কেউ তাকে সাহায্য করতে চান তবে ০১৩১৫৯০২৬৩০ এই পারসোনাল বিকাশ অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠাতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের লোকসংগীতের এক আবেগের নাম কাঙ্গালিনী সুফিয়া। তার প্রকৃত নাম টুনি হালদার। ‘কোন বা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’, ‘পরাণের বান্ধব রে’, ‘বুড়ি হইলাম তোর কারণে’, ‘নারীর কাছে কেউ যায় না’, ‘আমার ভাঁটি গাঙের নাইয়া’- এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গান দিয়ে কোটি কোটি মানুষের মন জয় করেছেন তিনি।

মাত্র ১৪ বছর বয়সে গ্রামীণ অনুষ্ঠানে গেয়ে শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। পেয়েছেন ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার।

Advertisement

মিলেছে খ্যাতি। কিন্তু কোনোদিন অর্থের অভাব কাটেনি। অর্থের পেছনে ছুটেননি অবশ্য কোনোদিন। সারা জীবন গান করেছেন। মানুষকে সুরের খোরাক দিতে ছুটেছেন পথ থেকে পথে। গান গেয়ে অর্থ উপার্জন কখনোই মুখ্য বিষয় ছিল না তার কাছে। ১৯৬১ সালে জন্মগ্রহণ করা এই মানুষটি এখনো বেঁচে আছেন সংগীতকে সঙ্গী করেই।

এলএ/এমকেএইচ