সন্ত্রাস দমনে ‘অপারেশন লিডেন্ড’-এর বর্ধিত অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে কয়েকশ’ ফেডারেল এজেন্ট পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারকে পাশে রেখে এ ঘোষণা দেন তিনি।
Advertisement
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ট্রাম্পের এ উদ্যোগে মূলত লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে শিকাগো-নিউ মেক্সিকোর মতো ডেমোক্র্যাটশাসিত এলাকাগুলোকে। আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘আইনের শাসন’ ইস্যুতে জনগণের মন জেতার চেষ্টা করছেন তিনি। করোনাভাইরাস মহামারিতে পঙ্গু অর্থনীতি এবং লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর জেরে জনপ্রিয়তায় রীতিমতো ধস নেমেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। প্রায় সব ক’টি জরিপেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে নিউইয়র্ক সিটি, ফিলাডেলফিয়া, লস অ্যাঞ্জেলস, শিকাগোর মতো শহরগুলোতে বন্দুকহামলার ঘটনা বেশ বেড়ে গেছে। এর জন্য শহরগুলোর ডেমোক্র্যাট মেয়র-গভর্নরদের দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প বলেন, এই সহিংস তাণ্ডব জাতির বিবেককে স্তম্ভিত করেছে। এই রক্তপাত বন্ধ হতে হবে। এটি অবশ্যই বন্ধ হবে।
Advertisement
অপারেশন লিজেন্ড কী?গত মাসে কানসাসে নিজবাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় লি-জেন্ড টালিফেরো নামে চার বছরের এক শিশু। তার নামানুসারেই সাম্প্রতিক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে অপারেশন লিজেন্ড।
এ অভিযানে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), মার্শাসাল সার্ভিসসহ অন্যান্য ফেডারেল এজেন্সির কর্মকর্তারা স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন।
উইলিয়াম বার জানিয়েছেন, তারা কানসাসে প্রায় দুইশ’ ফেডারেল এজেন্ট পাঠিয়েছেন। প্রায় একই সংখ্যক এজেন্ট পাঠানো হবে শিকাগোতে এবং নিউ মেক্সিকোর আলবুকার্ক শহরে যাবে অন্তত ৩৫ জন এজেন্ট।
তিনি জানান, এসব কর্মকর্তা শহরগুলোতে গিয়ে স্বাভাবিক গতিতে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়বেন। তবে তাদের কার্যক্রম হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এজেন্টদের মতো দাঙ্গা ও দলগত সহিংসতা রোধের কঠোর পদক্ষেপের মতো হবে না।
Advertisement
সমালোচনার মুখে ট্রাম্পযুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি সেবার ক্ষমতা মূলত অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে এবং উল্লেখিত শহরগুলোর গভর্নর ও স্থানীয় কর্মকর্তারা ফেডারেল এজেন্ট মোতায়েনের বিরোধিতা করেছেন।
ওরেগন গভর্নর কেট ব্রাউন ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে, ক্ষমতার অপব্যবহার বলে উল্লেখ করেছেন। পোর্টল্যান্ডের মেয়র টেড হুইলার বলেছেন, এটি গণতন্তের ওপর পরিষ্কার হামলা।
শিকাগোর মেয়র লোরি লাইটফুট বলেছেন, ‘আমরা অংশীদারিত্বকে স্বাগত জানাই, একনায়কতন্ত্রকে নয়।’
নিউ মেক্সেকোর গভর্নর মিশেল লুজান গ্রিশাম বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন যদি কর্তৃত্ববাদী, অপ্রয়োজনীয় এবং অহেতুক সামরিক ধাঁচের অভিযান চালিয়ে নিউ মেক্সিকান ও আমেরিকানদের জন্য প্রতিকূল অবস্থা তৈরি করতে চায়, তবে নিউ মেক্সিকোতে তাদের কোনও কাজ নেই।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি
কেএএ/পিআর