বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাংলাদেশও তা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। তবে কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্ববাণিজ্যের সুযোগ কাজে লাগাতে আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এফটিএ স্বাক্ষর করবে ভুটানের সাথে। এরপর পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু দেশের সাথে এফটিএ স্বাক্ষর হবে। ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের সাথে আলোচনা অনেক এগিয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) যৌথভাবে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইনটিগ্রেশন ফর ডেভলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত “কোভিড-১৯ অ্যান্ড বাংলাদেশ ইকোনমি” শীর্ষক ভার্চুয়্যাল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কোভিড-১৯ শেষ হওয়ার পর আমরা আবার ঘুড়ে দাঁড়াবো, আমরা সেটা পারবো। সামনে আমাদের জন্য শুভদিন অপেক্ষা করছে। কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্ববাণিজ্যের সুযোগ কাজে লাগানোর সময় এসেছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, করোনায় পরিবর্তিত এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে অনেক কিছু হবে। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। জাপান চীন থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদের সক্ষমতা ও যোগ্যতা দিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে জায়গা করে নেয়ার সময় এসেছে। সময় নষ্ট না করে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এবং পরবর্তী সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্ব একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এ টাস্ক ফোর্স কাজ করে যাচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এফটিএ স্বাক্ষর করবে ভুটানের সাথে। এরপর পর্যায়ক্রমে ৪২টি দেশের সাথে এফটিএ স্বাক্ষর করবো। ইন্দোনেশিয়াসহ ১১টি দেশের সাথে আলোচনা অনেক এগিয়ে গেছে।
Advertisement
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরী পোশাক খাত ঘুড়ে দাঁড়াচ্ছে। রফতানি বাজারে শুধু তৈরি পোশাকের উপর নির্ভর করে থাকলে আমাদের চলবে না। দেশের আইটি, ঔষধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সিরামিক, বৈদ্যুতিক সামগ্রী রফতানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সরকার আন্তরিকতার সাথে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে, সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিসম্প্রতি এক্সপোর্ট কম্পেটেটিভনেস ফর জবস ইসিফোরজে প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের মিরসরাই ইকোনমিক জোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে বেজার ১০ একর জমির ওপর এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ৫ একর জমির উপর দু’টি টেকনোলজি সেন্টার গড়ে তোলার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ টেকনোলজি সেন্টারে আধুনিক ডিজাইন ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা সম্ভব হবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
তিনি আরও বলেন, আশা করা যায় এ বছরের শেষে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ আসতে পারে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ সরকার সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার বিল্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাশের খান এবং ডিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট সামস মাহমুদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আবু ইউসুফ।
Advertisement
এমইউএইচ/এনএফ/জেআইএম