নির্ধারিত সময়ের একদিন পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় যাবে রড ও ডাল। দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী ট্রানজিটের প্রথম চালানের এসব পণ্য বুধবার (২২ জুলাই) যাওয়ার কথা থাকলেও ‘আনুষ্ঠানিকতার’ কথা জানিয়ে একদিন পেছানো হয়েছে।
Advertisement
পণ্য প্রেরণ ও গ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার সকালের এই আনুষ্ঠানিকতায় আখাউড়া ও আগরতলা স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব উপস্থিত থাকবেন। মূলত মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই একদিন পেছানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশের ম্যাংগু লাইন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের ডার্সেল লজিস্টিক লিমিটেডের পাঠানো পণ্যগুলো পরিবহন করছে কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভম্যান্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া’ চুক্তির আওতায় এবং ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর উভয় দেশের মধ্যে সাক্ষরিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহন করছে ভারত।
Advertisement
পরীক্ষামূলক প্রথম চালান হিসেবে ৫৩.২৫ মেট্রিক টন রড আর ৪৯.৮৩ মেট্রিক টন ডাল নিয়ে গত ১৪ জুলাই কোলকাতার সমুদ্রবন্দর থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় ‘সেজুতি’ নামের একটি জাহাজ। জাহাজটি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বিলম্বে মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে নোঙর করে। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ করে কে. জে. শিপিং। পরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে বুধবার ভোররাতে রড ও ডালবোঝাই চারটি ট্রেইলর আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছে সাড়ে ৪টায়।
ভারতীয় পণ্য পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. আক্তার হোসেন বলেন, বুধবার পণ্যগুলো আগরতলায় পাঠানোর জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া ছিল। কিন্তু ভারতীয় হাইকমিশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে আজকে পণ্য গ্রহণ করা হবে না। বৃহস্পতিবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হবে। এ আনুষ্ঠানিকতায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীও উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের পরীক্ষামূলক এই ট্রানজিট চালানের জন্য ফি নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এর মধ্যে ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি প্রতি চালান ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্ট ফি প্রতি মেট্রিক টন ২০ টাকা, সিকিউরিটি চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ১০০ টাকা, অ্যাসকর্ট চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ৫০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ১০০ টাকা, কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি প্রতি কন্টেইনার ২৫৪ টাকা। এছাড়া ইলেকট্রিক লক অ্যান্ড সিল ফি হিসেবে বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণ দিতে হবে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার কাজী ইরাজ ইশতিয়াক বলেন, ভারতীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। পণ্য পরিবহনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে মাশুল নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরেই মাশুল আদায়ের বিষয়গুলো সম্পাদিত হবে।
Advertisement
এর আগে আশুগঞ্জ সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল পরিবহন করেছে ভারত।
আজিজুল সঞ্চয়/এএম/এমকেএইচ