ব্যাংকিং খাতের ঋণ অনুমোদন ও আদায়ে দুর্বলতা খুঁজে বের করে তা প্রতিকারে সুপারিশের জন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হয়েছে।
Advertisement
ওই রায়ে ব্যাংকিং কমিশন গঠনে আদেশ না দেয়ায় মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় মঙ্গলবার (২১ জুলাই) এই আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
এ বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকে জালিয়াতি, দুর্নীতি ও ঋণ খেলাপি বিষয়ে পদক্ষেপ না নেয়ার বিষয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জনস্বার্থে একটি রিট করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। রিটে ব্যাংকিং কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। এ রিট মামলা চলাকালীন শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ঋণখেলাপিদের পুনঃতফসিলের সার্কুলার জারি করা হলে তাও আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, বিচারপতি জে বি এম হাসান ও মো. খায়রুল আলমের আদালত দীর্ঘ শুনানি করে ৩ নভেম্বর রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন। রায়ে কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬ এর ৩ ধারা মোতাবেক রিট অনুসারে কমিশন গঠন না করে বলা হয়, উক্ত আইন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকারকে কমিশন গঠন করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এবং এটা সরকারের বিবেচনা (ডিসক্রিশন)। এ মতামত দিয়ে রিট অনুসারে কমিশন গঠন করার নির্দেশ না দেয়ায় সংক্ষুব্ধ হয়ে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়।
Advertisement
মনজিল মোরসেদ বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ব্যাংকের অর্থ লুটপাট বন্ধে এবং অর্থনীতি শক্তিশালী করতে উক্ত আইনের বিধান অনুসারে কমিশন গঠন প্রয়োজন।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির করা রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রুল জারি করেন। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এর মধ্যে ২০১৯ সালের ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। এরপর রিটকারীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২১ মে ওই সার্কুলারের ওপর স্থিতাবস্থা বজার রাখার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২ জুলাই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। পরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে যারা ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টের সুবিধা নেবেন তারা নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন না। এছাড়া বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন কোর্টে এ রিট মামলা শুনানি করতে বলেন।
Advertisement
এফএইচ/এমএসএইচ/এমএস