বাবা চেয়েছিলেন ছেলে নামকরা ইঞ্জিনিয়ার হবে। ছেলেও বাবার স্বপ্নকে বিফলে যেতে দেননি। ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিইয়ারিংয়ে গ্রাজুয়েশন শেষ করেছেন। তবে সেদিকে ক্যারিয়ার গড়বার আগেই বনে গেছেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেতা। বলছি এ প্রজন্মের তরুণ অভিনেতা তৌসিফ মাহবুবের কথা। জন্ম, শৈশব ও কৈশোর সবকিছু কেটেছে তার রাজধানী ঢাকাতেই।বিজ্ঞাপনের হাত ধরে এখন টিভি নাটকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তৌসিফ মাহবুব। আজ ২৭ অক্টোবর ছিলো তার জন্মদিন। জীবনের বিশেষ এই দিনেও তার অবসর নেই। ব্যস্ত রয়েছেন নাটকের শুটিং নিয়ে। তারই ফাঁকে মুখোমুখি হলেন জাগো নিউজের বিনোদন বিভাগের। জানালেন তার জীবনের ‘প্রথম’ অনেক কিছুর খবর। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক-প্রথম স্কুলআমার প্রথম স্কুল অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। বসয় যখন সাড়ে তিন বছর তখন সেখানে ভর্তি হই। মনে আছে- প্রতিদিন ফিটফাট হয়ে স্কুলে যেতাম। যাতায়াত করতাম রিকসাতেই। বলে রাখা ভালো আমি ছোটবেলা থেকে পড়ালেখায় বেশ মনোযোগী ছিলাম। সেজন্য সবাই আমাকে খুব আদর-স্নেহ করতেন।প্রথম পড়া উপন্যাসআমার পড়া প্রথম উপন্যাসটি হচ্ছে চার্লস ডিকেন্সের ‘গ্রেট এক্সপেকটেশন’ উপন্যাসটি। তখন আমি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। খুব ভালো লেগেছিল এ উপন্যাসটি। অনেক আগে পড়েছিলাম কিন্তু এখনও সেটির রেশ মনে রয়ে গেছে। প্রথম শিক্ষকশিক্ষক না বলে যদি শিক্ষিকার কথা বলি তবে একজনের নাম শ্রদ্ধাভরে বলতে হবে। তিনি হচ্ছেন নাফিজা ম্যাডাম। অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। আমি যখন স্কুলে ভর্তি হই তখন থেকেই ম্যাম আমার ভীষণ কেয়ার করতেন। তিনি আমাকে হাতে ধরিয়ে, স্নেহ করে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। উনার কথা মনে পড়লেই শুদ্ধায় মাথা নত হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিন২০০৭ সালে আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ ছিল আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিন। যদিও তার আগের দিন অর্থাৎ ২৭ তারিখ ছিল আমাদের ওই ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন। কিন্তু সাময়িক কারণে আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি। দ্বিতীয় দিন যখন সবাই কয়েক জনের সাথে হায়-হ্যালো বিনিময় হয়। পরে আমি অনেকটা বৈষম্যের মধ্যে পড়ে যাই। কারণ তারা জানতে পারে আমি ইংলিশ মিডিয়াম থেকে পড়ে এসেছি। সেজন্য তাদের ধারণা ছিল আমি সব পারি। এরপর অবশ্য চলতে চলতে সবার সাথে মিশে যাই। এভাবেই কখন যে হাসি-আড্ডায় জীবন থেকে চারটা বছর চলে গেল টেরই পাইনি!প্রথম অভিনয়আদনান আল রাজীবের পরিচালনায় ২০১৩ সালে ভালবাসা দিবসে ‘অল টাইম দৌড়ের উপর’ নাটকে কাজটি ছিলো আমার জীবনের প্রথম অভিনয়। এটি প্রচারিত হওয়ার পর রাতারাতি সবকিছু চেঞ্জ হয়ে যায়। নাটকটি প্রচারের আগের দিন পর্যন্ত আমার ফেসবুকে ফলোয়ার ছিল মাত্র এক’শ। রাতারাতি সেটা সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর থেকেই তো চলছি...প্রথম পারিশ্রমিকআমার জীবনের প্রথম পারিশ্রমিকটা ছিলো টিউশনির টাকা। সময়টা তখন ২০০৪, আমার ও-লেভেল পরীক্ষা শেষ ছিল। তাই অবসরে একটা টিউশনি করতাম। প্রথম মাসের পর পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলাম চার হাজার টাকা। খুব ভালো লাগার সময় ছিল সেটা। কেননা যেকোনো মানুষের জীবনে প্রথম উপার্জন হাতে পাওয়ার আনন্দের চেয়ে মধুর কিছু নেই। প্রথম দুর্ঘটনাযমুনা সেতু চালু হওয়ার কিছুদিন পর নিজেদের গাড়ি বহরে পরিবারের সবাই মিলে বেড়াতে যাই সেখানে। কিন্তু ফিরে আসার পথে টাঙ্গাইল বাইপাস সড়কে আমাদের গাড়ি আচমকা মারাত্মক দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। তখন গাড়িতে গতি ছিল প্রায় ১১০! কারো তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও আমাদের গাড়ি বেচারার চেহারাটাই পাল্টে গিয়েছিলো। প্রথম প্রেম২০০৬ সালে কলেজে পড়ার সময় এক সুন্দরীর প্রেমে পড়েছিলাম। তার নামটা বলবো না। প্রথম এটুকু গোপনই থাক। হা হা হা.... প্রথম বিয়ের প্রস্তাবকী বলেন এসব! আমি কত ছোট মানুষ। এখনই বিয়ে কীসের। আপাতত এগুলো বলেই নিজেকে সান্তনা দেই। কিন্তু যখন দেখি চারপাশে সবাই বিয়ে শাদী করে সংসারী হচ্ছে তখন খুব কষ্ট হয় জানেন! এতগুলো বসন্ত পেরিয়ে গেল তবু বিয়ের প্রস্তাব পেলাম না। বিয়ের প্রস্তাবের অপেক্ষায় আছি। দোয়া করবেন যেন প্রথম প্রস্তাবই শেষ প্রস্তাব হয়। হা হা হা হা হা......এলএ/এমএস
Advertisement