জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম সংশোধন করে ‘সাহেদ করিম’ থেকে ‘মোহাম্মদ সাহেদ’ করায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আলমগীর। সোমবার (২০ জুলাই) বিকেলে ৬৬তম কমিশন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
Advertisement
সচিব বলেন, সাহেদের নাম পরিবর্তন জালিয়াতির সাথে ইসির কারা জড়িত, খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রমাণসাপেক্ষে সাহেদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, সাহেদের আসল নাম সাহেদ করিম, বাবার নাম সিরাজুল করিম, মা- মৃত সুফিয়া করিম। কিন্তু এখন তিনি যে এনআইডি ব্যবহার করছেন, সেখানে তার নাম মোহাম্মদ সাহেদ। ২০০৮ সালের ২৫ আগস্ট সাহেদের নামে যে জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করা হয়েছিল, তার নম্বর ছিল ২৬৯২৬১৮১৪৫৮৮৫। এখন তার নামে থাকা স্মার্ট এনআইডির নম্বর ৮৬৫০৪০৬১৮৭।
সাহেদ ২০১৯ সালে তার এনআইডি সংশোধন করার সময় জন্মনিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, পাসপোর্টের কপি এবং ‘ও’ লেভেলের সার্টিফিকেট জমা দেন। এনআইডির তথ্য সংশোধনে তার নাম সাহেদ করিম থেকে মোহাম্মদ সাহেদ হয়। অথচ এখন জানা যায় তিনি এসএসসি পাস।
Advertisement
এর আগে এনআইডি উইংয়ের অফিসার ইনচার্জ (কমিউনিকেশনস) স্কোয়াড্রন লিডার কাজী আশিকুজ্জামান সাংবদিকদের বলেন, মোহাম্মদ সাহেদ এনআইডিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক দিয়েছেন। কিন্তু পরিচয়পত্রের জন্য সব সময় এসএসসি ও সমমানের সনদ দেখাতে হয়। উনি এখানে ক্যামব্রিজের ‘ও’ লেভেল সার্টিফিকেট দিয়েছেন। সেটা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে নাগরিকত্ব সনদ, জন্মনিবন্ধন ও পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করে সঠিক পাওয়ায় এনআইডির তথ্য সংশোধন করা হয়েছে।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে সোমবার ইসি সচিব জানান, এনআইডি মহাপরিচালকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সাহেদ বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদ দিয়ে নাম পরিবর্তন করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে কিংবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে দেখব প্রকৃত ঘটনা কী। এরপর তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সংশোধিত এনআইডি বাতিল করা হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। আমরা ইতোমধ্যে এ ধরনের ঘটনায় অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। অনেকে শাস্তিও পেয়েছেন।
সচিব বলেন, সাহেদ প্রথমে যখন এনআইডি করেছিলেন, সেখানে তার নাম ছিল সাহেদ করিম। পরে তিনি এটি সংশোধন করে মোহাম্মদ সাহেদ হয়ে যান। প্রথমে তার জন্ম সাল ছিল ২ জুন ১৯৭৮। পরে তিনি সেটা ১৯৭৫ সালের ২ জুলাই করে নেন। আবার এর স্বপক্ষে তিনি ‘ও’ লেভেলের কাগজপত্র দাখিল করেন।
Advertisement
ইসি সচিব বলেন, আমাদের মাঠ পর্যায়ের কেউ হয়তো সহায়তা করতে পারে। তিনি তো মহাপ্রতারক আপনারাই বলছেন। কাজেই যেকোনো প্রতারণার আশ্রয় তিনি নিতে পারেন। আমরা তদন্ত করে দেখছি। আমাদের কেউ যদি তার এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, তবে তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বেশকিছু ঘটনায় আমরা আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, কারো এনআইডি ব্লক করে দেওয়া হলে, তিনি এনআইডিনির্ভর সব সেবা আর পান না। কেননা, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এনআইডি যাচাই করতে গেলে সে এনআইডির অস্তিত্ব খুঁজে পাবে না।
এইচএস/এসএইচএস/জেআইএম