ভ্রমণ

বিরিশিরির পথে পথে

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিরিশিরি। এখানে রয়েছে প্রকৃতির ঢেলে দেওয়া অপার সৌন্দর্য। অনেকে একে সাদা মাটির দেশও বলে থাকেন। নদী, পাহাড় আর সবুজে ঘেরা বিরিশিরিতে রয়েছে অনেক কিছু। তাই সময়-সুযোগ পেলেই সদলবলে ঘুরে আসুন বিরিশিরি।অবস্থানঢাকা থেকে মাত্র ১৮০ কিলোমিটার উত্তরে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত বিরিশিরি।সোমেশ্বরী নদীসোমেশ্বরী নদীকে বিরিশিরির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যমণি বলা যায়। চারপাশে পাহাড়ে ঘেরা সোমেশ্বরীর উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে পানির রংও পাল্টায়। গ্রীষ্মের মৌসুমে হেঁটে পার হওয়া গেলেও বর্ষায় থাকে কানায় কানায় পূর্ণ। এই নদী পারাপারের জন্য রয়েছে নৌকা।ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীবিরিশিরিতে দেখা যায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। এখানে বনই, বুনা, গারো, মান্দি আর হাজংদের বাস। গারো ও হাজং ছাড়া প্রায় সবকটি গোষ্ঠীই বাংলা ভাষাভাষি। এখানকার বেশির ভাগ কর্মজীবীই গারো আর হাজং। সংস্কৃতিকালচারাল একাডেমির পাশেই রয়েছে তেভাগা আন্দোলনের কিছু স্মৃতিস্তম্ভ। রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জাদুঘরও। জাদুঘরের দুটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরিতে রয়েছে পাহাড়িদের লেখা বই ও জার্নাল। এখান থেকে নিয়মিত একটি সাময়িকীও প্রকাশ করা হয়।চীনামাটির পাহাড় বিজয়পুর সীমান্ত ঘেঁষা সাদামাটির পাহাড় বা দুর্গাপুর চীনামাটির পাহাড়। যা দেখতে সাদা, ধূসর আর খানিক লালচে রঙের।নীল হ্রদপাহাড়ের চারপাশের সাদা মাটি যেন পানির রংটাকে আরো গাঢ় করে দিয়েছে। গোপালপুর পাহাড় দুর্গাপুর থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তর সীমান্তেই গোপালপুর পাহাড়। রাণীখং গির্জাগোপালপুর পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে রাণীখং গির্জা।  কমলারাণীর দীঘিবিরিশিরি ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই কমলা রাণীর দীঘি। একে সাগরদীঘিও বলা হয়। রাজমহলরাজা সুসংয়ের রাজমহল- যার নামানুসারে এই উপজেলার নামকরণ করা হয় সুসং দুর্গাপুর। মন্দির-গীর্জাকুলাপাড়ার কাছে আছে দাশা-বুশা মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির এবং লোকনাথ মন্দির। পথে পেয়ে যাবেন সেন্ট যোসেফের গির্জা। বাগানকমলা বাগান আর দারুচিনি বাগানের ঘ্রাণ মুহূর্তেই আত্মভোলা করে ফেলতে পারে। বাহনবিরিশিরির প্রায় সর্বত্রই রিকশা কিংবা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে ভ্রমণ উপযোগী। খুব অল্প খরচেই সবকটি স্থান ঘুরে ফেলতে পারবেন। তবে একটু দরদাম করে নেওয়াই ভালো।কীভাবে যাবেনমহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি নেত্রকোনা। ভাড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন দুর্গাপুর। সেখান থেকে বাস বা অটোরিকশাতে মাত্র ২৫ মিনিটের পথ। মহাখালী থেকে সরাসরিও যেতে পারেন দুর্গাপুর। খেয়াল রাখতে হবে শেষ ৩ কিলোমিটার পথ খুবই উঁচু-নিচু এবং ভঙ্গুর। তাই সরাসরি না যাওয়াই ভালো।কোথায় থাকবেনদুর্গাপুরে এসি/নন এসি সব ধরনের হোটেলই রয়েছে। তবে এগুলো সস্তা নয়। সস্তায় থাকতে হলে আপনাকে কালচারাল একাডেমির গেস্ট হাউজ কিংবা ওয়াইএমসি নামক প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে হবে। এছাড়া তাঁবু খাটিয়ে নিতে পারেন।কী খাবেনবিভিন্ন মধ্যমানের রেস্টুরেন্টে সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়। পাবেন বকের মাংসও।এসইউ/আরআইপি

Advertisement