বিনামূল্যে সরকারিভাবে লাখ লাখ মানুষের করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি পরীক্ষার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরি একটি যন্ত্র ব্যবহার করে রক্তের নমুনা পরীক্ষায় করোনা অ্যান্টিবডির ফল তাৎক্ষণিকভাবে জানা যাবে।
Advertisement
অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের তৈরি অ্যান্টিবডি টেস্টের ওই যন্ত্রের মাধ্যমে গোপনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। সেই পরীক্ষায় প্রায় শতভাগ সঠিক ফল আসায় দেশটির সরকার গণহারে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করতে যাচ্ছে।
দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, কয়েকটি ডায়াগনোস্টিকস ফার্মের সঙ্গে যৌথভাবে অ্যান্টিবডি টেস্টের যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। কোনও ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা তা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই জানিয়ে দেবে যন্ত্রটি। বাড়িতে বসেই প্রত্যেকেই করোনার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করতে পারবেন।
গত জুনে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করে গোপনে মানব পরীক্ষা চালানো হয়। এতে দেখা যায়, এই যন্ত্রে করোনার অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ফল ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ সঠিক এসেছে। ব্রিটিশ সরকারের করোনা অ্যান্টিবডি পরীক্ষার নেতৃত্বে রয়েছেন অক্সফোর্ডের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জন বেল। তিনি বলেন, এই র্যাপিড টেস্ট সত্যিই অসাধারণ। আমরা নিজেরাই এই টেস্ট করতে পারি।
Advertisement
যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা হাসপাতালে রক্তের নমুনা পাঠিয়ে করতে হয়। এই পরীক্ষার ফল জানতে কয়েকদিন সময়ের দরকার হয়। টেলিগ্রাফ বলছে, আগামী সপ্তাহে ফিঙ্গার-প্রিকের মাধ্যমে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার চূড়ান্ত অনুমোদন মিলতে পারে। সেলক্ষ্যে ব্রিটেনজুড়ে বিভিন্ন কারখানায় ফিঙ্গার-প্রিকের হাজার হাজার প্রোটোটাইপ উৎপাদন করা হচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা, এই পরীক্ষায় সেটি জানা যাবে। এমনকি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের শরীরে যে মাত্রার ইমিউনিটির দরকার হয়; সেই ইমিউনিটি কোন পর্যায়ে আছে, অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় সেটিও জানা যাবে।
করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেলে সেটি কতদিন টিকে থাকবে সেব্যাপারে পরিষ্কার কোনও তথ্য যদিও এখনও পাওয়া যায়নি। এর আগে, বেশ কিছু গবেষণায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের অ্যান্টিবডি দুই থেকে তিন মাসের মতো মানবদেহে টিকে থাকে বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন।
যুক্তরাজ্যে নতুন এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩ লাখ ১৩ হাজার ৪৮৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে। এতে বিশ্বে প্রাণহানি ৬ লাখ ছাড়িয়েছে, আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৪৪ লাখের বেশি মানুষ।
Advertisement
সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ।
এসআইএস/এমকেএইচ