ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মো. মারুফ হাসান বলেছেন, পূজা ও তাজিয়া মিছিলে হামলার বিষয়ে আগে থেকেই গোয়েন্দা তথ্য ছিল। সে কারণে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু এরপরেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে হামলা হলেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের সুযোগ নেই। কেননা নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যেও হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। রাজধানীতে মহররমের তাজিয়া মিছিল বের হওয়ার সময় বোমা হামলার ঘটনাস্থল পুরান ঢাকাস্থ হোসনি দালান পরিদর্শন করতে এসে মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে এ কথা বলেন তিনি।হোসনি দালানে বোমা হামলার ঘটনায় সঠিক তদন্তের উদ্দেশ্যে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান শেখ মো. মারুফ হাসান বলেন, পূজা ও তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে পূজা মণ্ডপ ও হোসনি দালানসহ পুরো ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। শুক্রবার বিকেলে ছিল হিন্দুদের বিসর্জন অনুষ্ঠান, অন্যদিকে মুসলমান শিয়া ধর্মাবলম্বীদের ছিল তাজিয়া মিছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে রাতে তাজিয়া মিছিল বের না করতে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তবুও তারা মিছিল বের করে। ৪০০ বছরের ঐতিহ্যের শোভাযাত্রার কথা ভেবে বাধা দেওয়া হয়নি। যেসব স্থান দিয়ে মিছিল প্রদক্ষিণ করে সেসব এলাকায় ৮/৯শ’ পুলিশ সদস্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে মোতায়েন করা হয়েছিল। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও মিছিল শুরুর প্রাককালেই হামলার ঘটনা ঘটে।ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা আজ এখানে এসেছি মূলত: ঘটনাটি কিভাবে ঘটলো, এধরণের পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে আমাদের আরও কি ধরণের নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার, সে বিষয়গুলোর খুটিনাটি দেখার জন্যই এখানে আসা। ‘হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ডিবি পুলিশ মামলার তদন্ত ভার নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমান নির্ভর কিছু বলা ঠিক হবে না।’সংগ্রহ করা সিসি টিভি ফুটেজ দেখে কাউকে শনাক্ত করা গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু সিসি টিভি ক্যামেরা ফুটেজ নয় আরও যা যা দরকার তা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে তদন্ত শেষ হলে এব্যাপারে কিছু বলাটা ঠিক হবে’।হামলা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য ছিল কিনা জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, হা পূজা ও তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে রাজধানীতে একটা অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরির হামলার পরিকল্পনার তথ্য আমরা পেয়েই নিরাপত্তা জোরদার করেছিলাম। হামলার পরিকল্পনা জানার পরে হামলা হয়েছে, সেক্ষেত্রে কি পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হামলা হলেই এটা বলা ঠিক হবে না পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল ছিল। বরং আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। এরপরেও হামলা হয়েছে’।নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা স্বত্তেও হামলা হতে পারে উল্লেখ করে শেখ মো. মারুফ হাসান বলেছেন, ‘পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতেও আপনারা দেখেন, ব্যাপক নিরাপত্তা থাকা স্বত্তেও হামলায় হতাহত হচ্ছে। আমাদের এখানেও ব্যাপক নিরাপত্তা ছিল। কিন্তু এটা মানতে হবে যে নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যেও হামলা হতে পারে’। ‘আমরা ঘটনাটি তদন্তের স্বার্থে খতিয়ে দেখছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সম্ভব না হলে আবারো সময় নেয়া হবে’।এসময় উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মীর রেজাউল আলম, যুগ্ম কমিশনার (অপস) কৃঞ্চ পদ রায়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ ও ডিএমপির লালবাগ বিভাগের ডিসি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।জেইউ/একে/এমএস
Advertisement