আইন-আদালত

মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আজহারের রিভিউ আবেদন প্রস্তুত

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।

Advertisement

রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেলে যে কোনো সময় এ আবেদন সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এ টি এম আজহারুল ইসলামের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে গত ১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেছিলেন, রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে। তখন এ টি এম আজহারের আইনজীবী জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে রায় পেলে রিভিউ করব।

এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর আপিলের রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ। ওইদিন আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

Advertisement

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে ২ নম্বর, ৩ নম্বর এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান আজহার।

এ ছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখেন। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়।

গত বছরের ১০ জুলাই এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে সিএভি (রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ) রাখেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।

Advertisement

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এ টি এম আজহারের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের মধ্যে এক নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে। সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) অভিযোগ ছাড়াও তিনি যে আলবদর কমান্ডার ছিলেন তাও প্রমাণিত হয় বলে উল্লেখ করা হয় রায়ে।

২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করেন।

এফএইচ/জেডএ/এমকেএইচ