খেলাধুলা

বিকেএসপিতেই আছে আগামী দিনের সাকিব-মুশফিক!

এরই মধ্যে অধিনায়ক মাশরাফি সরে দাঁড়িয়েছেন নেতৃত্ব থেকে। তামিম ইকবালের ওপর বর্তেছে দল পরিচালনার গুরু দায়িত্ব। একদিন আসবে, যেদিন বাংলাদেশকে খেলতে হবে ‘পঞ্চপান্ডব’ ছাড়া। কেননা মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, তামিম, মুশফিকের সবার বয়সই ত্রিশের ঘরে।

Advertisement

ফিটনেস লেভেল ঠিক থাকলে আর ফর্ম ধরে রাখতে পারলে হয়তো ২০২৩ এর বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলতে পারবেন। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মে তারপর খেলা কঠিন হবে। ততদিনে লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ, মেহেদি হাসান, নাঈম হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেনরা আরও পরিণত হয়ে উঠবেন। সঙ্গে বিশ্বজয়ী যুব দল থেকে আকবর আলী, পারভেজ ইমন, মাহমুদুল হাসান, রাকিবুল হাসান, শরিফুলরাও নিশ্চয় উঠে আসবেন।

কিন্তু এর বাইরে আরও চার-পাঁচ বছর পরে আর কোন নতুন প্রতিভা আছে কি? এখন যারা বয়সভিত্তিক দলে খেলছেন, বিশেষ করে অনূর্ধ-১৭ দলে কি এমন কোন ক্রিকেটার আছে, যাদের নিয়ে বাজি ধরা যায়, ঘষামাজা করলে যারা নিশ্চয়ই জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে পারবেন- এমন প্রতিভাবান ক্রিকেটার কি আছে যে বা যারা হতে পারে আগামীর তামিম, মুশফিক, সাকিব, মাশরাফি?

বাংলাদেশ দলের সাবেক ওপেনার মেহরাব হোসেন অপি মনে করেন আছে। তাও একজন, দুজন নয়, অন্তত চার-পাঁচ জন ক্রিকেটারের একটি বহর আছে, যারা উঠে আসছেন এবং সবাই অত্যন্ত মেধাবি। অপির বিশ্বাস, তাদের মধ্যে আছে অমিত সম্ভাবনা। সঠিক পরিচর্যা হলে তারাই হবেন আগামীর বাংলাদেশ।

Advertisement

মেহরাব হোসেন অপি দেশের ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান আর বিশ্বকাপে লাল-সবুজ জার্সি গায়ে প্রথম অর্ধশতক উপহার দেয়া ব্যাটসম্যান। কিন্তু সেই অপি কি করে আগামীর তামিম, সাকিব, মুশফিক ও রিয়াদের সন্ধান দেবেন? আগামীর সম্ভাবনা নির্ণয় ও যাচাইয়ে অপির কথাকে মানদণ্ড ভাবা কেন? একটু গড়মিল ঠেকছে তাই তো? মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন?

তাহলে জেনে রাখা ভালো, মেহরাব হোসেন অপি এখন বাংলাদেশ অনূর্ধ-১৭ দলের প্রধান সহকারী কোচ। সোহেল ইসলামের সঙ্গে কাজ করছেন সবে কৈশোর পার করা এক ঝাঁক প্রতিভাবানদের নিয়ে। সেই সব কিশোর প্রতিভার মাঝেই পাঁচ-ছয়জনকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছেন অপি। যাদের মাঝে আছে অমিত সম্ভাবনা।

তারা কারা? ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের ইউটিউব লাইভ ‘নট আউট নোমানে’ সে কথাই জানিয়েছেন মেহরাব হোসেন অপি। জানিয়েছেন, এ মুহূর্তে অনূর্ধ-১৭ দলে কয়েকজন সত্যিকার ট্যালেন্টেড ক্রিকেটার আছে। যারা সুপার ট্যালেন্ট এবং অপি তাদের নিয়ে বাজি ধরতেও রাজি। তার বিশ্বাস, ঐ তরুণরা পর্যায়ক্রমে জাতীয় দলে খেলবেই। সেই তালিকায় সবার আগে তার মুখ থেকে এসেছে দুটি নাম। যাদের নিয়ে অপি আশা দেখেন।

অপি বলেছেন, ‘বেশ কজন ব্যাটসম্যানই আছে আমাদের। তাদের ভেতরে কয়েকজন আছে, যাদের নিয়ে বাজি ধরা যায়, ধরে নেয়া যায় তারা একদিন বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলবেই খেলবে। প্রথমেই যার নাম বলব, তার নাম মাহবুবুর রবিন, ডানহাতি ওপেনার। বিকেএসপির ছাত্র। এখন ক্রীড়াশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পড়াশুনা করছে। অন্যজন সাকিব শাহরিয়ার। সেও বিকেএসপির ছাত্র। দারুণ প্রতিভাবান। তার ব্যাটিং পজিশন ওয়ান ডাউন। আমি অনূর্ধ-১৭ দলে যত ট্যালেন্টেড প্লেয়ার পেয়েছি, তার মধ্যে এই সাকিব শাহরিয়ার ব্যতিক্রমী ট্যালেন্ট। ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না তার প্রতিভা আসলে কতটা। এদের দুজনার ব্যাপারে আমি জোর দিয়েই বলতে পারি , তারা জাতীয় দলে খেলবেই খেলবে।’

Advertisement

‘এছাড়া আরও আছে। নাঈম অসাধারণ ক্রিকেট মস্তিষ্ক। সেও ওপেনার। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে। সে বিকেএসপির ছাত্র। খুব ভাল নেতৃত্বগুণের অধিকারী। আমার মনে হয়, ভাল অধিনায়ক হবার অনেক সম্ভাব্য গুণাবলি আছে তার ভেতরে। আরও আছে মোহাম্মদ সিয়াম, চারে ব্যাট করে। সেও খুব ভাল প্লেয়ার।’

‘বোলারদের ভেতরে সবার আগে উঠে আসে একটি নাম, মুশফিক। ছয় ফুটের কাছাকাছি পেস বোলার। কুড়িগ্রামের ছেলে। অনেক জোরে বল করে। এই বয়সে যে গতিতে বল করে অবিশ্বাস্য! আমার মনে হয়, মুশফিক এখনই যে গতিতে ও যে মানে বোলিং করে এথনই সে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলতে পারে। আশিকুর আছে। সে সাতক্ষীরার পেস বোলার। আমার মনে হয় তারাও জাতীয় দলের ভবিষ্যত প্রসপেক্ট।’

অপির কথায় আছে একটি বার্তা, যে ক্রীড়াশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আজকের সাকিব-মুশফিক, আগামীর সাকিব-মুশফিকও উঠে আসছেন সেই বিকেএসপি থেকেই।

এআরবি/এসএএস/এমএস