শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ফলাফল বিপর্যয়ের ঘটনায় তা পুনঃমূল্যায়নে তদন্ত কমিটি গঠিত হয় গত ১৬ মার্চ। ইতোমধ্যে চারমাস পূর্ণ হলেও কাজ শুরু করেনি তদন্ত কমিটি। ফলে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
জানা গেছে, গত মার্চের ১ম সপ্তাহে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ২০১৫-১৬ সেশনের ৪র্থ বর্ষ ২য় সেমিস্টার, ২০১৬-১৭ সেশনের ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার এবং ২০১৭-১৮ সেশনের ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার পরীক্ষার ফলালফল প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত ফলাফলে বিপর্যয় পরিলক্ষিত হওয়ায় আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। গত ১৫ ও ১৬ মার্চ টানা দুইদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তিনদফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-ডি'তে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
এরই প্রেক্ষিতে ১৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে এক জরুরি সভায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফয়সাল আহম্মদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।
Advertisement
এ সময় শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহও মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন। তবে ইতোমধ্যে চারমাস পূর্ণ হলেও তদন্ত কমিটি এখনও কাজ শুরু না করায় ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন ও পুনরায় ফল প্রকাশের বিষয়টি নিয়ে শঙ্কায় আছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, বিভাগের সার্বিক ফলাফল তদন্ত করা, সম্প্রতি প্রকাশিত ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন করে নতুনরুপে প্রকাশ ও সমাজবিজ্ঞান সমিতিকে কার্যকর করা।
বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন করে ৪র্থ বর্ষ ২য় সেমিস্টারের পরীক্ষার ফলাফলসহ স্নাতক চার বছরের ফলাফল অফিসিয়ালি একসাথে প্রকাশ করার কথা। কিন্তু বর্তমানে মাস্টার্স ১ম সেমিস্টার শেষ করে ২য় সেমিস্টারের ক্লাস চলছে। এছাড়া স্নাতকের অফিসিয়াল ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় অনেক চাকরির পরীক্ষায় আমরা আবেদন করতে পারছি না।
তাদের অভিযোগ, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস ও অফিসিয়াল কাজ চললেও এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে এরকম কোনো আন্তরিকতাই দেখা যাচ্ছে না।
Advertisement
তাদের সমস্যার বিষয়গুলো বিবেচনা করে তা অতিদ্রুত সমাধানের জন্য গত মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) বিভাগের প্রধান বরাবর একটি আবেদনপত্র দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তবে আবেদনপত্র পাননি বলে জানান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন।
ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন কবে এবং কিভাবে করা হবে জানতে চাইলে ড. লায়লা আশরাফুন জাগো নিউজকে বলেন, আমি তো এসব ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমাকে প্রশ্ন করারও কিছু নেই। এটি তদন্ত কমিটি দেখবে। আমি তদন্ত কমিটির সদস্যও না। তদন্ত কমিটি ফলাফল পুনঃমূল্যায়নের বিধি অনুযায়ী কাজ করে সিদ্ধান্ত নেবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমি যে তদন্ত কমিটির প্রধান এ ধরনের অফিসিয়াল চিঠি পাইনি। চিঠি পাওয়ার পর এ বিষয়ে কাজ শুরু করবো।
তদন্ত কমিটির চিঠির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এ ধরনের কোনো চিঠি সম্পর্কে রেজিস্ট্রার দপ্তর অবগত নয়।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এখন করোনার মধ্যে সবকিছু সীমিত আকারে চলছে। চাইলেই সবকিছুতে হাত দিতে পারছি না। আর তিন-চারমাস আগের বিষয়ে পুরোপুরি ধারণা নেই।
এমএএস/এমকেএইচ