আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে, সুস্বাস্থ্যের জন্য কেবল দু’টি বিষয় প্রয়োজন আর তা হলো স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং নিয়মিত শরীরচর্চা, তাহলে আবার চিন্তা করুন। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যা বেশিরভাগ সময়েই আমাদের নজরে থাকে না। বলা হচ্ছে খাবারের সময় সম্পর্কে। সুস্থ থাকার জন্য শৃঙ্খলার প্রয়োজন এবং আপনি যে খাবার খাচ্ছেন তার সময় এবং বিরতি সমান গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের সময় কেন গুরুত্বপূর্ণ তার তিনটি কারণ প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া-
Advertisement
এটি আমাদের শরীরচক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে
সঠিক পুষ্টিগুণ, ঘুমের চক্র এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ খাবারের সময় সবকিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণে। এগুলো সঠিকভাবে বজায় রাখার বিষয়টিও আমাদেরই দায়িত্ব। এই অভ্যাসগুলোর মাধ্যমেই শরীর একটি চক্রাকার তালে অভ্যস্ত হয়ে যায়। সুতরাং, শরীরের সেই ছন্দ বজায় রাখার জন্য খাবারের সময় নির্দিষ্ট করা গুরুত্বপূর্ণ।
বিপাক বাড়িয়ে তোলে
Advertisement
আমরা কোন সময়ে খাবার খাচ্ছি তা আমাদের বিপাক নির্ধারণ করে। আমরা যখন সকালে উঠি তখন আমাদের বিপাক সর্বোচ্চে থাকে। যদি সেই সময়েই আমাদের শরীরে জ্বালানি না পৌঁছায় তবে শরীর বিপাকের হার ধরে রাখতে সক্ষম হবে না। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আমাদের বিপাক ধীর হয়ে যায়, সুতরাং সহজে হজমের জন্য রাতের খাবার আটটার মধ্যে শেষ করা জরুরি।
শরীরের ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে
আমরা যখন খাবার খাই তখন আমাদের শরীর নানাধরনের জিনিস গ্রহণ করে। লিভারের কাজ হলো ডিটক্সিফিকেশন এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপ। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, আপনার খাওয়ার সময়গুলো এই ক্রিয়াকলাপটিকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনি যখন রাত দশটায় বা তারও পরে অর্থাৎ ঘুমাতে যাওয়ার আগে আগে খাবার খান, তখন এটি আপনার শরীরে এমন চাপ সৃষ্টি করে যে ঘুমের সময়ে লিভার ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া পরিচালরা করে। তাই ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে করার জন্য রাতের খাবার সময়মতো খাওয়া উচিত।
সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের মধ্যে আদর্শ ব্যবধান
Advertisement
আমাদের শরীর খাবার হজম করতে ৩-৪ ঘণ্টা সময় নেয়। সুতরাং, দুটি খাবারের মধ্যে ব্যবধান ৪ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়। এর চেয়ে দীর্ঘ ব্যবধানের কারণে অম্লতা দেখা দিতে পারে। তিনবেলা খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই নাস্তা এবং ফল খেতে হবে। সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের মধ্যে কমপক্ষে ২ টি স্ন্যাকস থাকা উচিত।
সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের সেরা সময়
সকালের খাবার: বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে সকালের খাবার খাওয়া উচিত। এটি না করলে বিপাক ধীর হতে পারে। ঘুম থেকে ওঠার পরে যত তাড়াতাড়ি সকালের খাবার খাবেন, আপনার বিপাক এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য এটি তত ভালো হবে।
দুপুরের খাবার: আমাদের হজম শক্তি রাত ১২টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী থাকে। এই সময়ে, শরীর অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার হজম করতে এবং সমস্ত পুষ্টি সঠিকভাবে শোষিত করতে সক্ষম হয়। তাই এই সময়ের মধ্যে দুপুরের খাবার সেরে নিন।
রাতের খাবার: দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের সময়কালের মধ্যে ৪ ঘণ্টার ব্যবধান রেখে রাত্রে আটটার মধ্যে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। শোবার সময় এবং রাতের খাবারের মধ্যেও ২ ঘণ্টার ব্যবধান থাকা উচিত। এটি হজমের উন্নতি করে এবং রাতে ভালো ঘুমে সহায়তা করে।
এইচএন/এএ/পিআর