অর্থাভাবে মানুষকে কুফরির দিকে ঠেলে দেয়। পাপের পথেও পরিচালিত করে। সে কারণেই অর্থাভাব থেকে বেঁচে থাকতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দোয়া প্রার্থনার তাগিদ দিয়েছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
Advertisement
অর্থাভাব থেকে মুক্ত হতে অন্যায় পথে অর্থ উপার্জন ছেড়ে দেয়া জরুরি। কেননা অন্যায়ভাবে উপর্জন ইসলামে হারাম। এ উপার্জনে জীবিকা গ্রহণ করলে ওই বান্দার কোনো কাজই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
তাই মানুষের অভাব বিমোচনের উপায় হিসেবে সঠিক পথে থেকে অর্থ উপর্জন করার মাধ্যমে স্বচ্ছলতা লাভ করার কিছু ইসলামি নিয়ম-নীতি রয়েছে। যা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য পালন করা আবশ্যক। আর তাহলো-- কর্ম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাকওয়া (আল্লাহর ভয়) অবলম্বন করা;- সব সময় আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া;- যাবতীয় গোনাহের কাজ থেকে তাওবাহ করা;
- সুখে-দুঃখে আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখা;- যথাযথ বিধান মেনে আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগি করা;- অভাব মোচনে পরস্পরকে উত্তম ঋণ 'করজে হাসানাহ' দেয়া।
Advertisement
- তাওফিক অনুযায়ী আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা;- গরিব-দুঃখীর মাঝে দান করা;- প্রয়োজনে আল্লাহর জন্য হিজরত করা;
- সামর্থবানদের হজ ও ওমরা আদায় করা;- ইলমে দ্বীনের শিক্ষার্থীদেরকে সাহায্য করা।
মুমিন মুসলমান আন্তরিকতার সঙ্গে এ কাজগুলো করলে সহজে অভাব থেকে মুক্তি পাবে। কারণ আল্লাহর সাহায্য ছাড়া অর্থের কষ্ট দূর হবে না।
অভাবমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে আল্লাহর সাহায্য এবং তাঁর ভরসার বিকল্প নেই। প্রতিটি কাজের দায়িত্ব পালনে আল্লাহর ভয় অন্তরে জাগ্রত থাকলে, মালিক-শ্রমিক সবাইকে আল্লাহ তাআলা দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করবেন।
Advertisement
- অভাব মোচনে বেশি বেশি এ দোয়াটি করা। যা আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য কুরআনে তুলে ধরেছেন। আর তাহলো-اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا مَآئِدَةً مِّنَ السَّمَاء تَكُونُ لَنَا عِيداً لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِّنكَ وَارْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَউচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা আনযিল আলাইনা মাইদাতাম মিনাস্সামায়ি তাকুনু লানা ঈদাল্লি আউয়্যালিনা ওয়া আখিরিনা ওয়া আয়াতাম মিনকা ওয়ারযুকনা ওয়া আনতা খায়রুর রাযিকিন।’ (সুরা মায়েদা: আয়াত ১১৪)
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক আল্লাহ! তুমি আকাশ থেকে আমাদের জন্য খাবার ভরতি খাঞ্চা অবতীর্ণ কর যেন তা আমাদের প্রথম অংশের জন্য আর আমাদের শেষ অংশের জন্য আনন্দোৎসব হবে এবং তোমার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন হয়। তুমি আমাদেরকে রিজিক দান কর। প্রকৃতপক্ষে তুমিই উত্তম রিজিকদাতা।’
- অভাব মোচনে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ দোয়াটি প্রতিটি ইবাদতে বেশি বেশি পড়া-اَللَّهُمَّ اِنِّى أَسْألُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَىউচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা; ওয়াত তুক্বা; ওয়াল আ’ফাফা; ওয়াল গেনা।
অর্থ : হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করি এবং আপনার ভয় তথা পরহেজগারি কামনা করি এবং আপনার কাছে সুস্থতা তথা নৈতিক পবিত্রতা কামনা করি এবং সম্পদ তথা সামর্থ্য কামনা করি। (মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমদ)আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার জীবনের প্রতি পদক্ষেপে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলার মাধ্যমে অভাবমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর