যুক্তরাষ্ট্রের এক কোম্পানি চলতি মাসেই দুই বছর মেয়াদে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন পরীক্ষা শুরু করছে। প্রাথমিক সাফল্যের ভিত্তিতে এই টিকাকে ঘিরে আশার আলো দেখা যাচ্ছে, যদিও বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে সতর্ক করে দিচ্ছেন।
Advertisement
কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সংগ্রামে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা আবিষ্কারের লক্ষ্যে পুরোদমে কাজ চলছে। এরই মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছে মার্কিন বায়োটেক কোম্পানি মডার্না। আগামী ২৭ জুলাই থেকে সেই কোম্পানি মানুষের উপর এই টিকা পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার মডার্না বলেছে, এই টিকা নিলে মানুষের সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব, এই পর্যায়ে তা বোঝা যাবে।
এই টিকা আরএনএ বা জিনভিত্তিক প্রথম টিকাগুলোর অন্যতম। ফলে এই উদ্যোগ সফল হলে প্রথাগত টিকার তুলনায় অনেক দ্রুত বড় আকারের উৎপাদন শুরু করা সম্ভব।
জুলাই মাসের শেষ থেকে মডার্না কোম্পানির তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজারের মানুষকে টিকা দেয়া হবে। তাদের মধ্যে অর্ধেক ১০০ মাইক্রোগ্রাম ডোজের টিকা পাবেন এবং বাকি অর্ধেক প্লাসেবো বা কার্যকর নয়, এমন ‘নকল’ টিকা পাবেন। তারপর গবেষকরা দুই বছর ধরে সেই ব্যক্তিদের ওপর নজর রাখবেন। তাদের মধ্যে কেউ আক্রান্ত হলে পরীক্ষা করে দেখা হবে, যে মডার্না কোম্পানির টিকা আদৌ কোভিড-১৯-এর উপসর্গ প্রতিরোধ করতে পেরেছে কিনা।
Advertisement
এই রোগের মারাত্মক রূপ থেকে মানুষ রক্ষা পেলেই টিকাটিকে সফল হিসেবে গণ্য করা হবে। এই গবেষণার মেয়াদ ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত হলেও তার অনেক আগে প্রাথমিক ফলাফল জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টিকা তৈরির ক্ষেত্রে মডার্না-সহ কিছু কোম্পানির অগ্রগতি সত্ত্বেও বিজ্ঞানীরা উচ্ছ্বাস সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছেন। তাদের মতে, বাজারে প্রথমে যে সব টিকা আসবে সেগুলো সবচেয়ে কার্যকর ও নিরাপদ নাও হতে পারে। আপাতত মাত্র ৪৫ জনের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে মডার্না যে সাফল্য পেয়েছে, বৃহত্তর পরিসরে সেই সাফল্য এখনই আশা করা যাচ্ছে না। এছাড়া এই টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়েও সংশয় রয়েছে, যদিও টিকার ক্ষেত্রে এমনটা স্বাভাবিক বলে দাবি করা হচ্ছে।
এমআরএনএ-১২৭৩ নামের এই পরীক্ষামূলক টিকা প্রথম পর্যায়ে ১৮ থেকে ৫৫ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। বিভিন্ন বয়সের মানুষের ওপর এই টিকার প্রভাব নিয়ে এখনো অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। এছাড়া এই কোম্পানির আচরণের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক স্বার্থ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিনামূল্যে অথবা নামমাত্র মূল্যে টিকা গোটা বিশ্বের মানুষের নাগালে আনার ক্ষেত্রে এমন উদ্যোগ কতটা আন্তরিক, সমালোচকরা সেই প্রশ্নও তুলছেন। ডিডব্লিউ।
এসআইএস/পিআর
Advertisement