বিশেষ প্রতিবেদন

ফুটপাতে দোকান গাড়ি বিপাকে পথচারী

‘রাজধানীতে পর্যাপ্ত গণপরিবহন নেই, তবে আছে অসহনীয় যানজট। যানজটে নাকাল নগরবাসীর হেঁটে চলার জন্য ফুটপাত ব্যবহারেরও কোন উপায় কারণ ফুটপাত দখল হয়ে থাকে হকারদের কাছে।’ এভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন কামরুল ইসলাম নামের একজন স্কুলশিক্ষক।তিনি বলেন- নীলক্ষেত থেকে মিরপুর যাবো, যতদূর চোখ যায় ততদূর পর্যন্ত যানজটের স্থবিরতা দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম সিটি কলেজ পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে বাসে উঠি কিন্তু ফুটপাতে বসা হকার, পার্ক করা গাড়ি ও মানুষের ভিড়ে হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই।’ রাজধানীতে বাড়ছে যানজট। প্রায় সব রাস্তায়, সিগন্যালে প্রতিদিন চোখে পড়ে অসংখ্য বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে। আর এই অসহনীয় যানজটে অতিষ্ট সাধারণ কর্মজীবী মানুষ। তারা যখনই বাস থেকে নেমে ফুটপাত ধরে হাঁটতে চান তখন পড়েন আরেক রকমের বিড়ম্বনায়। কারণ, ফুটপাত আছে ঠিকই কিন্তু সেট ফুটপাত দখল হয়ে হরেক পণ্যের স্থায়ী বাজারে পরিণত হয়েছে, যেখানে চলাচল অনেকটাই দুঃসাধ্য। ফুটপাতের পাশে গাড়ি পার্কিং এবং ফুটপাত দিয়ে মটরসাইকেল চলাচল করার কারণেও পথচারীরা ফুটপাত ব্যবহার করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিড়ম্বনায় পড়েন। ফলে একদিকে যানজট অপরদিকে ফুটপাত ব্যবহার করতে না পারায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন নগরবাসী। সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর সদরঘাট, ফুলবাড়িয়া, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, পল্টন, জিপিও, বায়তুল মোকাররম, নিউমার্কেট, সাইন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোড, ফার্মগেট, মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাক, কাকরাইল, মিরপুর ও গাবতলীর ফুটপাতগুলোতে বিভিন্ন দোকান বসানো হয়েছে আর এই ফুটপাতগুলো ব্যবহার করা রীতিমতো দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।ফুটপাতের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড় দোকান হলে তাদেরও মাসিক ভাড়া দিতে হয় আর ছোট দোকানে প্রতিদিন দিতে হয় নির্দিষ্ট টাকা। এই টাকা কাদের দিতে হয় জানতে চাইলে একাধিক দোকানি জানান, ‘লোক আছে’। তবে কারা এ লোক জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তারা। ফার্মগেটের ওভার ব্রিজ থেকে একটু সামনে (তেজগাঁও কলেজের দিকে) হঠাৎ চোখে পড়ল জটলা এগিয়ে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল ফুটপাত দোকানির সঙ্গে এক পথচারীর (তারেক আহমেদ) বাকবিতণ্ডা। পথচারী তারেক আহমেদ জানান, ফুটপাত দখল করে দোকান সাজাচ্ছে সেই দোকানি, আমি বললাম একটু পিছনের দিকে যান, মানুষের হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে, আর তিনি (দোকানি) আমাকে মারতে তেড়ে এসে বলে ‘টাকা খরচ করে দোকান বসাতে হয়েছে’।তারেক আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোথায় যবো ভাই- রাস্তায় এত যানজট, ফুটপাতে দিয়ে হেঁটে যে যাবো সেখানে আবার বসানো হয়েছে দোকান। ফুটপাতে দোকান, রাস্তায় গাড়ি, বিপাকে আমাদের মত পথচারী।এএস/জেডএইচ/এসএইচএস/এআরএস/আরআইপি

Advertisement