দেশজুড়ে

পশুর হাটের অবস্থা দেখে ভয়ে ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতারা

স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই গাইবান্ধার ঐতিহ্যবাহী ভরতখালী পশুর হাটে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছে। করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা হাট কর্তৃপক্ষ এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের কারও মুখে মাস্কও নেই। হাটের অবস্থা দেখে করোনার সংক্রমণের ভয়ে ক্রেতারা হাটে প্রবেশ না করেই রাস্তা থেকে ফিরে যাচ্ছেন।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ভরতখালী পশুর হাটে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দুপুরে শত শত ক্রেতা-বিক্রেতা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা না রেখে হাটে পশু বেচা-কেনা করছেন।

পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর থেকে এ হাটে আসা গরু বিক্রেতা জালাল উদ্দিন বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে পলাশবাড়ী থেকে দুটি গরু বিক্রির জন্য এই হাটে এনেছি। কিন্তু হাটের কোনো নিয়ম-কানুন নেই। যে যার মতো চলাফেরা করছে। এ জন্য অনেক ক্রেতা আসছে না।

সদর উপজেলার বাদিয়াখালী এলাকার সরকারি চাকরিজীবী কামাল উদ্দিন বলেন, ভেবেছিলাম হাটে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তা থেকে হাটের দিকে তাকিয়ে প্রবেশ না করেই ফিরে যেতে হচ্ছে।

Advertisement

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ এলাকার গরু ব্যবসায়ী সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি একটি গরু বিক্রি করতে ভরতখালী হাটে এসেছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোনো ক্রেতা পাইনি।’

কোরবানির জন্য গরু কিনতে সাঘাটার জুমারবাড়ী এলাকা থেকে আসা বিপ্লব ইসলাম জানান, হাটে সামাজিক দূরত্ব নেই। তাই আমি হাটে প্রবেশ না করেই চলে যাচ্ছি।

ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া থেকে গরু কিনতে আসা ফরজার রহমান বলেন, ভরতখালী পশুর হাটে প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে যে যার মতো হাটে ঢুকছে। ইচ্ছা মতো চলাফেরা করছে। কারও মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব নেই। হাটে হাজার হাজার পশু উঠলেও ক্রেতাদের ভিড় তেমন একটা নেই। আমরা গরু না কিনেই চলে যাচ্ছি ।

মুখে মাস্ক নেই। চেয়ার-টেবিল নিয়ে গরু বিক্রির রশিদ লিখছেন হাট ইজারাদারের সহকারীরা। যেন করোনার কোনো ভাবনা নেই। ভরতখালী পশুর হাট মসজিদ সংলগ্ন উত্তরের গেট তদারকির দায়িত্বে থাকা আব্দুল আজিজ জানান, করোনাভাইরাস ও বন্যার কারণে বিক্রি কমে গেছে। চার ঘণ্টায় মাত্র আটটি গরু বিক্রি হয়েছে।

Advertisement

এ বিষয়ে হাটের ইজারাদার মোহাম্মদ আলী গং বলেন, বন্যার পানি বাড়ার কারণে আমরা অনেক টেনশনে আছি। হয়তো আগামী শনিবারের মধ্যে হাটে হাঁটু পানি হবে। সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে আগামীতে হাট বসানোর সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

গাইবান্ধা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার গৌতম চন্দ্র মোদক জানান, হাটে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার। এছাড়া অনলাইনে বেচা-কেনা করলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা যাবে।

এ বিষয়ে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর জানান, ভরতখালী হাটে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে যদি পশুর হাট বসে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জাহিদ খন্দকার/আরএআর/এমকেএইচ