সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় সোমবার দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আদালত আজ (মঙ্গলবার) ফের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ধার্য করেছেন। সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৫টা ৫০মিনিট পর্যন্ত সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. মফুর আলী জানান, সোমবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে, তবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার আবারো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. শওকত জানান, সোমবার সোয়া ৫টা পর্যন্ত মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রাজন হত্যা মামলায় রায়ের তারিখ নির্ধারিত হতে পারে বলে আমরা আশা করছি।এর আগে সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় কামরুল ইসলামসহ ১১ আসামিকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আদালতের কাঠগড়ায় প্রধান আসামি শহরতলির কুমারগাঁও এলাকার শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসি কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিত আলম ওরফে মুহিত ও আলী হায়দার ওরফে আলী, তাদের চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না, টুকেরবাজার ইউনিয়নের পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের বাসিন্দা ও ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণকারী নূর আহমদ ওরফে নুর মিয়া, দুলাল আহমদ, আয়াজ আলী, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, ফিরোজ মিয়া, আছমত আলী ওরফে আছমত উল্লাহ ও রুহুল আমিন ওরফে রুহেল উপস্থিত ছিলেন।গত রোববার রাজন হত্যা মামলায় প্রথম দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও আসামি যাচাই বাছাই শেষ হয়। ওই দিন ৩৪২ ধারায় আসামিদের যাচাই বাছাইকালে রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামসহ সকল আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।এছাড়া নুর আহমদ আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। গত ২১ অক্টোবর কামরুলের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনরায় জেরা করা হয় আলোচিত এই মামলার ১১ জন সাক্ষীকে।গত ২২ সেপ্টেম্বর পলাতক আসামি সৌদি প্রবাসি কামরুলসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে চার্জ গঠন করা হয়। আসামিদের মধ্যে কামরুলের ভাই শামীম ও পাভেল নামের দুইজন পলাতক রয়েছেন।গত ৩১ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ পলাতক তিন আসামির বিরুদ্ধে পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময়সীমার মধ্যে পলাতকরা আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত বিচারিক কাজ শুরুর লক্ষে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করেন।গত ২৪ আগস্ট একই আদালত পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী পরদিন ২৫ আগস্ট জালালাবাদ থানা পুলিশ তিন পলাতক আসামির মালামাল ক্রোক করে।১৫ অক্টোবর বৃস্পতিবার বিকেল ২টা ৫৭ মিনিটে রাজন হত্যার প্রধান আসামি কামরুলকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। পরে ঢাকা থেকে ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আনা হয়। রাতেই এসএমপির কোতোয়ালী মডেল থানায় রাখা হয়। শুক্রবার সেখান থেকে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে শিশু রাজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ২৮ মিনিটের একটি ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।ছামির মাহমুদ/বিএ
Advertisement