জাতীয়

সরকারকে সেই মালয়েশিয়া প্রবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান ২১ সংগঠনের

মালয়েশিয়ায় অভিবাসী কর্মীদের ওপর নিপীড়নমূলক আচরণ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় প্রচারিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে একজন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সমন জারিসহ সার্বিক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের অভিবাসন খাতের ২১টি সংগঠন।

Advertisement

কোনো সাংবাদিক ও প্রবাসীকে হয়রানি না করতে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে দাবি জানেয়ে তারা এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

গতকাল শনিবার (১১ জুলাই) ২১টি সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায়। বিবৃতিদাতা সংগঠনগুলো হলো- রামরু, ওয়ারবি, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), ওকাপ, বিএনএসকে, আইআইডি, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, বমসা, বাসুগ, ইনাফি, কর্মজীবী নারী, বিএনপিএস, ডেভকম, ইমা, আওয়াজ ফাউন্ডেশন, রাইটস যশোর, বিলস, বাস্তব, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন এবং মাইগ্রেশন নিউজ।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৩ জুলাই ‘লকড আপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হয়। এতে দেখানো হয়, মালয়েশিয়া সরকার মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডারের (এমসিও) মাধ্যমে মহামারির সময়ে অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়ার নিপীড়নের যে ছবি উঠে এসেছে, সেটা নিন্দনীয় ও গভীর উদ্বেগের। মালয়েশিয়ার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগে অতীতেও ছিল। মালয়েশিয়া সরকারের এই ঘটনাগুলো তদন্ত করা উচিত।

Advertisement

বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, এই ঘটনার পর আল জাজিরার সাংবাদিকদের ডেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মালয়েশিয়ার সরকার। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সাথে আমরাও এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।

এতে আরও বলা হয়, আল জাজিরার প্রতিবেদনে সাক্ষাৎকার দেয়ায় বাংলাদেশি তরুণ মো. রায়হান কবিরকেও (২৫) খোঁজা হচ্ছে বলে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। তাতে বলা হয়েছে, রায়হান কবিরের ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে সমন জারি ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমরা দেখেছি, রায়হানের বিষয়ে তথ্য জানতে এরই মধ্যে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ও পুলিশের আইজি গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন।

রায়হানসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেয়া অন্যায় নয়। আর রায়হান কোনো অপরাধও করেননি। তিনি বৈধভাবে সেখান থাকছেন। অথচ এমনভাবে মালয়েশিয়া বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাকে খুঁজছে যেন তিনি বড় অপরাধী। আমরা রায়হানসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ার যেসব মানবাধিকার সংস্থা প্রবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছে আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। সেখানকার আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনকে তৎপর হয়ে রায়হান কবিরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়াসহ প্রবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।

Advertisement

জেপি/এইচএ/পিআর