পড়ন্ত বিকেল। ঘড়ির কাটায় পৌনে ৪টা বাজতেই রেফারির বাঁশিতে ফু। সঙ্গে সঙ্গেই গোল যুদ্ধে নেমে পড়ে চকরিয়া ও টেকনাফ উপজেলা ফুটবল দল। তখন যেন দু’দলের ২২ খেলোয়াড়ের চাকচিক্য ছড়িয়ে পড়ে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামের নতুন মাঠ।খেলা শুরুর মাত্র ৪ মিনিটের ব্যবধানেই টেকনাফের নেটে প্রথম বল জড়িয়ে দর্শকদের মাঝে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেন চকরিয়া ফুটবল দলের ১৪ জার্সিধারী স্ট্রাইকার বিদেশি খেলোয়াড় চিকু চার্লস। এটি দিয়েই যেন গোলবন্যার সূচনা। দর্শকদের তাক লাগিয়ে ১০ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয় গোলটিও করেন চিকু চার্লস। খেলার শুরুতেই দুই গোল হজম করে অনেকটা বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে টেকনাফ।এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে চকরিয়ার গোলে বেশ কয়েকবার হানা দেয় গোলাপী রংয়ের জার্সিধারী টেকনাফ। তবে গোলের দেখা হয়ে ওঠেনি। চকরিয়ার খেলোয়াড়দের দখলে চলে যায় পুরো মাঠের নিয়ন্ত্রণ। কোনো গোলের দেখা ছাড়াই খেলার প্রথমার্ধ শেষ করতে হয় টেকনাফকে।১৫ মিনিট বিরতির পর সাড়ে ৪টায় আবারো রেফারির বাঁশিতে ফু। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর ১০ মিনিট মাঠে দু’দল তুমুল যুদ্ধ চালান। পৌনে ৫টায় তৃতীয় গোল হজম করে টেকনাফ। চকরিয়ার পক্ষে গোলটি করেন ৭ নং জার্সিধারী আরিফ। চকরিয়ার এ উড়ন্ত সূচনায় অস্থিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে শেষতক অসহায় হয়ে পড়ে টেকনাফের খেলোয়াড়রা।৪টা ৫৫ মিনিটে চকরিয়ার পক্ষে আরো একটি গোল যোগ করেন পলাশ। এরপরও হাল ছাড়তে নারাজ টেকনাফ সমন্বয়হীনতার কারণে প্রতিপক্ষের গোল বক্সের কাছাকাছি গিয়েও গোলের দেখা পায়নি। শেষের ৩ মিনিটে টেকনাফের জালে আরো দু’বার বল জড়ান চকরিয়ার ১০ নং জার্সিধারী আবছার। এরপর রেফারির লম্বা বাঁশিতে খেলার সমাপ্তি ঘটে।প্রথম দিনের উড়ন্ত সূচনায় উচ্ছ্বসিত চকরিয়া উপজেলা ফুটবল দল। অনেকদিন পর ফুটবল মাঠে আবারো হারানো ঐতিহ্যের আনন্দ ফিরে পেয়ে ক্রীড়াপ্রেমীরা করতালিতে মুখর করে তোলে স্টেডিয়ামের গ্যালারি। খেলা শেষে মাঠে গোলদাতা বিদেশি চার্লস, আরিফ, পলাশ ও আবছারকে ঘিরে চকরিয়ার সমর্থকদের আনন্দ যেন উপচে পড়ে। ৬-০ গোলের বিশাল ব্যবধানের জয়ে নক আউট পদ্ধতির এই টুর্নামেন্টে চকরিয়া উপজেলা পৌঁছে গেছে কাঙ্ক্ষিত সেমিতে।এর আগে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করতে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন অতিথিরা। শুরুতেই অতিথিবৃন্দ উদ্বোধনী ম্যাচের দু’দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি আলী হোসেন বেলুন উড়িয়ে টূর্নামেন্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।খেলা উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক আলী হোসেন ও পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ সদ্য নির্মিত জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবনের মিডিয়া বক্স উদ্বোধন করেন। মঙ্গলবারের খেলায় মুখোমুখি হবে পেকুয়া ও উখিয়া উপজেলা ফুটবল দল।সায়ীদ আলমগীর/বিএ
Advertisement