মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। শনিবার (১১ জুলাই) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
Advertisement
এর আগে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে তার সহকারী সামরিক সচিব কর্নেল রাজু আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকীব আহমেদ, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাইতুশ শরফ জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
নানা জটিলতা নিয়ে অসুস্থ সাহারা খাতুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৬ জুলাই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককে নেয়া হয়েছিল। ভর্তি করা হয় সেখানকার বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) রাতে তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
শুক্রবার (১০ জুলাই) মধ্যরাতে মরদেহ ব্যাংকক থেকে ঢাকা পৌঁছায়। রাতে বিমানবন্দরে সাহারা খাতুনের মরদেহ গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগ নেতারা বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
শনিবার বেলা ১১টার আগে বনানী কবরস্থানে জাতীয় পতাকা ও আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা মোড়ানো সাহারা খাতুনের মরদেহ আনা হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়। আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, জাসদ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপতিম সংগঠন যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় সাহারা খাতুনের কফিনে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মায়ের কবরে দাফন করা হয়।
৭৭ বছর বয়সী সাহারা খাতুন জ্বর, অ্যালার্জির সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন। গত ৩ জুন ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি রাজধানীর ইউনাইডেট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ব্যাংক যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল।
১৯৪৩ সালের ১ মার্চ ঢাকার কুর্মিটোলায় জন্মগ্রহণ করেন সাহারা খাতুন। তার বাবার নাম আব্দুল আজিজ ও মাতার নাম টুরজান নেসা। সাহারা খাতুন তিন মেয়াদ ধরে ঢাকা-১৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালে মহাজোট ক্ষমতায় এলে প্রথমে তাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। পরে সেখান থেকে সরিয়ে পাঠানো হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে।
Advertisement
সাহারা খাতুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা আইনজীবী সমিতি ও আন্তর্জাতিক মহিলা জোটের সদস্য।
এইউএ/এসআর/এমএস