পদ্ম সেতু প্রকল্পে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে হাবিবুল্লাহ হাবিব নামে এক প্রতারককে আটক করেছে র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সদস্যরা। সোমবার দুপুরে শহরের মনিহার এলাকায় তার আস্তানা থেকে আটক করা হয়। এ সময় র্যাব তার আস্তানা থেকে একটি কম্পিউটার, নিয়োগের নামে ভুয়া ফরম এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উদ্ধার করে।প্রতারণার শিকার যশোর জেলা রিকশা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ঘোপ এলাকার বাসিন্দা শামীম পারভেজ মিন্টু জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হলে যশোরের হাবিবুল্লাহ হাবিব প্রতারণার ফাঁদ পাতে। তিনি বিভিন্ন মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, পদ্মা সেতুতে কাজের জন্য সরকারের কয়েক হাজার শ্রমিক দরকার হবে। এই কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নিয়োগ দিতে পারবেন। হাবিবের কথায় বিশ্বাস করে যশোরে অঞ্চলের শতাধিক ব্যক্তি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রথমে ফরম পূরণের নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে একশ করে টাকা নেন তিনি। এরপর মেডিকেল টেস্টের (ডাক্তারি পরীক্ষা) নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার করে টাকা আদায় করেন। আগ্রহী প্রার্থীদের ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকার ফকিরাপুল, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গিয়ে প্রার্থীরা রক্ত দিয়ে আসেন। এক একজনকে প্রয়োজনে একাধিকবার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু পরীক্ষার রিপোর্ট আর আসেনা। এভাবে প্রায় তিন বছর কেটে গেছে।তিনি আরো বলেন, চাকরির খবর নিতে গেলে প্রতারক হাবিব প্রার্থীদের আজ না কাল বলে ঘুরাতে থাকেন। বছর খানেক আগে তার প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে তার কাছে টাকা ফেরত চান লোকজন। কিন্তু তিনি অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয়নি। র্যাবের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর তাকে আটক করা হয়। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে র্যাব প্রতারক হাবিবকে কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করে। তারা হাবিবের ব্যবহৃত একটি কম্পিউটার, ভুয়া কাগজপত্র উদ্ধার করেছে।র্যাব-৬ যশোরের উপ-পরিচালক স্কোয়াড্রন লিডার কাওছার আহমেদ জানান, প্রতারক হাবিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে বেশ কিছু ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র, একটি হজ এজেন্সির কাগজপত্র, পাসপোর্ট সাইজের কিছু ছবি, একটি কম্পিউটার রয়েছে।এদিকে, হাবিবুল্লা হাবিব আটক হওয়ার সংবাদ শুনে র্যাব ক্যাম্পের সামনে ধীরে ধীরে হাজির হন প্রতারণার শিকার অর্ধশত মানুষ। তারা সবাই হাবিবের বিচার দাবি করেন। মিলন রহমান/এআরএ/এমএস
Advertisement