মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্ব অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। মুত্যু ও জনদুর্ভোগের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সবশেষ হিসেব বলছে, আগে যেমনটা ধারণা করা হয়েছিল এই ব্লকের অর্থনৈতিক অবস্থা তার চেয়েও খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে।
Advertisement
গত মে মাসে ইউরোপীয় কমিশন এ বছরের জন্য মন্দার যে পূর্বাভাস দিয়েছিল এখন তা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। নতুন হিসাব বলছে, ১৯ দেশের ইউরোজোনে ২০২০ সালে ৮.৭ শতাংশ মন্দা দেখা দিতে পারে। আর পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নে (২৭টি দেশ) অর্থনীতির ৮.৩ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হতে পারে। মে মাসে যে হিসাব করা হয়েছিল তাতে ধারণা করা হয়, এই হিসাব দুটি যথাক্রমে ৭.৭% ও ৭.৪% হবে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হচ্ছে, ইউরোপের অর্থনীতি ২০২১ সালে প্রত্যাশার চেয়েও ধীরগতিতে পুনরুদ্ধার শুরু হবে। সে বছর ইউরোপীয় অঞ্চলে ৬.১% হারে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে, আর ইইউতে তা হবে ৫.৮ শতাংশ হারে।
করোনা মহামারির প্রভাব বছরের প্রথম কোয়ার্টারেই (জানুয়ারি-মার্চ) পড়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ দেশে মার্চে কয়েক সপ্তাহ ধরে লকডাউন চলায় দেখা গেছে, দ্বিতীয় কোয়ার্টারে (এপ্রিল-জুন) মন্দার প্রভাব পড়েছে বেশি।
Advertisement
ইউরোপীয় কমিশন বলছে, ইউরোপের একেক সদস্য রাষ্ট্রের ওপর যেমন মহামারির প্রভাব একেক রকম, তেমনি ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও সেটাই হবে। যেমন এ বছর জার্মানির অর্থনীতি সংকুচিত হবে ৬.৩ শতাংশ, কিন্তু ফ্রান্সে তা ১০.৬ শতাংশ, স্পেনে ১০.৯ শতাংশ ও ইতালিতে ১১.২ শতাংশ।
ইউরোপীয় কমিশন যেসব ঝুঁকির কথা বলছে, তা এটা ধরে নিয়ে যে, সামনে করোনার ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ আসবে না। তাই অনিশ্চয়তা থেকেই যায়। তারপরও করোনার প্রাদুর্ভাব কতদিন চলবে সেটাও অজানা। তাই অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব আসলেই কতটা হবে, তা অনিশ্চিত। এর প্রভাবে শ্রমবাজারের সংকট প্রলম্বিত হবে এবং কোম্পানিগুলো আর্থিক তরলতার সংকটে ভুগবে। অনিশ্চয়তার ঝুঁকি রয়েছে পুঁজিবাজারেও। এই অনিশ্চয়তার কারণে তা স্থিতিশীল হতে পারবে না।
সূত্র : ডয়েচেভেলে
এমএসএইজ/এমএস
Advertisement