আন্তর্জাতিক

ভারত-চীনের সৈন্য প্রত্যাহার কী ফলপ্রসূ হবে?

ভারত ও চীনের মধ্যে বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠকের তিনদিনের মাথায় লাদাখের হট স্প্রিং এলাকায় পেট্রল পয়েন্ট ফিফটিনে দু’পক্ষের সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার দিল্লির সামরিক সূত্রগুলো সেনা প্রত্যাহারের এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

Advertisement

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল গত রোববার সন্ধ্যায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বৈঠক করেন। তবে অনেকেই বলছেন, ওই বৈঠকের পর চীন ও ভারত যে বিবৃতি দিয়েছে তাতে বিশাল পার্থক্য ছিল এবং চীনা সৈন্য প্যাংগং হৃদের বিতর্কিত এলাকা থেকে সরার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।

ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে যে দ্বিপাক্ষিক কাঠামো আছে, সেখানে গত রোববার সন্ধ্যায় উভয় দেশের বিশেষ প্রতিনিধিরা ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন। বৈঠকের দু’দিন পর মঙ্গলবার লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দু’পক্ষই সেনা প্রত্যাহার শেষ করে। বুধবার সেই একই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে হট স্প্রিং এলাকায় পেট্রল পয়েন্ট ফিফটিনে।

আগামী দুই একদিনের মধ্যে গোগরা পেট্রল পয়েন্ট ১৭ থেকেও চিরবৈরী এ দুই দেশের সৈন্যরা প্রায় দুই কিলোমিটার করে পিছু হটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও চীনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নিরুপমা রাও বলছেন, দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের বৈঠকের ঠিক কী প্রতিফলন বাস্তবে পড়বে তার বিশেষ কোনও ডিটেইলস এখনও আমাদের কাছে নেই।

Advertisement

তিনি বলেন, সেই প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ হবে বলেই ধরে নেয়া যায়। তবে মনে রাখতে হবে, এই বৈঠক হয়েছে এমন একটা পটভূমিতে যখন দু’পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে এটাকে বড় অগ্রগতি বলতেই হবে। বিশেষত যেখানে ১৫ জুন গালওয়ানের ঘটনার পর দু’দেশের সম্পর্কই ভাঙতে বসেছিল।

রোববারের বৈঠকের পর ভারত ও চীন পৃথক বিবৃতি দিয়েছে, তাতেও দু’পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক স্পষ্ট। দিল্লির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের প্রতিনিধিই এ বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন যে উভয় দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএসি) মর্যাদা দেবে এবং একতরফাভাবে এমন কিছু করবে না যাতে স্থিতাবস্থা লঙ্ঘিত হয়।

কিন্তু বেইজিংয়ের বিবৃতিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা কিংবা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার কথা উল্লেখ করা হয়নি। ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো তানভি মদান বলেন, আমি যেভাবে বিষয়টা দেখি– ভারতীয় বিবৃতিতে জোর দেয়া হয়েছে আগের স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর।

‘আর চীন চেয়েছে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কটা পুন:স্থাপন করতে। সীমান্ত সমস্যা নিরসনের চেষ্টা হবে। কিন্তু তার পাশাপাশি অন্য জিনিসগুলো নিয়ে চীন এগিয়ে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে ভারত প্রযুক্তি ও টেলিকম খাতে চীনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে যেগুলো পাল্টানো সম্ভব নয়– কাজেই দু’দেশের সম্পর্কে অবধারিতভাবে এগুলোর প্রভাব পড়বে। বিবিসি বাংলা।

Advertisement

এসআইএস/পিআর