করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন শিশুসাহিত্যিক ও মুক্তিযোদ্ধা আলম তালুকদার। তিনি বুধবার বিকেল ৩টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
Advertisement
আলম তালুকদারের মেয়ে নিপা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত শনিবার তার করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে।
আলম তালুকদারের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করছেন শিল্প-সাহিত্য জগতের ব্যক্তিরা। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কবি আমিনুল ইসলামসহ কবি-লেখকগণ।
১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে আলম তালুকদারের জন্ম। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তিনি ছড়াকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। নিজেকে ‘অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে পরিচয় দিতেন।
Advertisement
১৯৬৮ সালে দেয়াল পত্রিকার মাধ্যমে তার লেখালেখি শুরু। কর্মজীবনে তিনি গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অতিরিক্ত সচিব হিসেবে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
তাঁর প্রথম বই ‘ঘুম তাড়ানো ছড়া’ প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে। তার উল্লেখযোগ্য ছড়ার বই হচ্ছে- খোঁচান ক্যান, চাঁদের কাছে জোনাকি, ডিম ডিম ভুতের ডিম, ঐ রাজাকার, যুদ্ধে যদি যেতাম হেরে, বাচ্চা ছড়া কাচ্চা ছড়া, ছড়ায় ছড়ায় আলোর নাচন, জাদুঘরের ছড়া, ছড়ায় ছড়ায় টক্কর, ছড়া সমগ্র প্রভৃতি।
তার শিশুতোষ গল্পের বই হচ্ছে- মহাদেশ বাংলাদেশ উপদেশ, শিশুদের শিশুটামি, অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, নাই দেশের রূপকথা, ভুতের সঙ্গে ভুত আমি, কিশোর সমগ্র, গল্প সমগ্র প্রভৃতি। সম্পাদিত বই হচ্ছে- শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান স্মারক গ্রন্থ, জাদুঘর বিচিত্রা, টাঙ্গাইল জেলার স্থান নাম বিচিত্রা, ছোট ছোট উপাখ্যান হাসিতে আটখান।
তিনি জীবদ্দশায় পালক অ্যাওয়ার্ড, চোখ সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার, জসীম উদদীন পুরস্কার, কবি কাদির নওয়াজ পুরস্কার, স্বাধীনতা সংসদ পুরস্কার, অলোক আভাষ সাহিত্য পত্রিকা পুরস্কার, শিল্পাচার্য জয়নুল পুরস্কার, সাহস সম্মাননা, ফুটতে দাও ফুল সম্মাননা পদক, লাটাই ছড়াসাহিত্য পুরস্কার ও টাঙ্গাইল সাহিত্য সংসদ পুরস্কার লাভ করেন।
Advertisement
এসইউ/এমএস